শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় জর্জরিত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের একের পর এক ফ্লাট থেকে উদ্ধার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। বাড়ি, বাগান বাড়ি, ফ্ল্যাট অফিসের পর এবার রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ‘ঘনিষ্ঠ বান্ধবী’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিয়েও তদন্ত শুরু করলেন ইডি আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত, পার্থ ঘনিষ্ঠ এই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকেই গত এক সপ্তাহে বেনজিরভাবে মিলেছে টাকার পাহাড়। দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জ এবং উত্তর চব্বিশ পরগনার বেলঘড়িয়ার দুটি অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে মিলেছে নগদ প্রায় ৫০ কোটি টাকা। সঙ্গে কোটি টাকার গয়না, সম্পত্তির দলিল এবং বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতি তো বটেই, জাতীয় রাজনীতিতেও শুরু হয়েছে তোলপাড়। চাপের মুখে পড়ে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার পাশাপাশি দল থেকেও সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এমতাবস্থায় শুক্রবার সকালেই সামনে এল আরো এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ইডি সূত্রে খবর, বাড়ির পর অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও মিলেছে কোটি টাকার হদিস। এদিন সকালে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনো পর্যন্ত অর্পিতার তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ মিলেছে। সেই তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এখনো পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে দু কোটি দু লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যেই ওই অ্যাকাউন্টগুলিকে ফ্রিজ করা হয়েছে ইডির তরফ থেকে।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার রাতেই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের টালিগঞ্জ করুণাময়ীর ডায়মন্ড সিটি সাউথের আবাসন থেকে চারটি দামী গাড়ি বিপাত্তা। এই গাড়িগুলির বাজারমূল্য প্রায় ৫০ কোটি বলেই জানা যাচ্ছে। এই গাড়ির তালিকায় রয়েছে অডি এ৪, হন্ডা সিটি, হন্ডা সিআরভি এবং মার্সিডিজ বেঞ্জ।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার এই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দক্ষিণ কলকাতার একটি ফ্ল্যাট থেকেই উদ্ধার হয় ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। ইডি আধিকারিকদের আশঙ্কা এই পুরো টাকাটিই এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির এবং এই টাকার সঙ্গে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এরপরেই শনিবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেন ইডি আধিকারিকরা।
এখানেই শেষ নয়, বুধবার অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বেলঘরিয়ার আরও একটি ফ্ল্যাট থেকে মেলে নগদ প্রায় ২৮ কোটি টাকা। আধিকারিকদের সন্দেহ, এখনো বহু জায়গায় দুর্নীতির বহু টাকা লুকিয়ে রেখেছেন ‘অপা’ জুটি। ফলে প্রায় প্রত্যেক দিনই জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি পার্থ এবং অর্পিতার একাধিক বাড়ি এবং ফ্ল্যাটে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা।