পূর্ব আশঙ্কাকে সত্যি করে ধীরে ধীরে গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ৷ তবে এবার মারাত্মক রকমের উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না৷ দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় হাসপাতালে রোগী ভর্তির পরিমাণ অনেক বেশি ছিল৷ উপসর্গও ছিল প্রবল৷ তবে সাম্প্রতিক কোভিড স্ফীতিতে সংক্রমণের তুলনায় হাসপাতালে ভর্তির অনুপাত অনেকটাই কম। তবে এই পরিসংখ্যান বাড়তে পারে অনুমান করেই রাজ্যগুলিকে এখন থেকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিল কেন্দ্র।
রাজ্য সরকারকে চিঠি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ৷ চিঠি তিনি স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন, রাজ্য সরকার যেন এখন থেকে মেডিক্যাল অক্সিজেন মজুত করার বিষয়ে তৎপর থাকে। পাশাপাশি সমস্ত হাসপাতাল, নার্সিংহোম সব প্রতিটি চিকিৎসা কেন্দ্রে লিক্যুইড মেডিক্যাল অক্সিজেনে সরবরাহের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার কথাও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব৷ দু’পাতার চিঠিতে রাজ্য সরকারকে মোট ১১টি বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে৷ সেগুলি হল-
১) যে সকল চিকিৎসাকেন্দ্রে করোনা আক্রান্ত রোগীকে ভর্তি রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা রেয়েছে, সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে অতিরিক্ত মেডিক্যাল অক্সিজেন মজুত রাখতে হবে।
২) লিক্যুইড মেডিক্যাল অক্সিজেনের ট্যাঙ্ক পূর্ণ রাখতে হবে৷ যাতে আপদকালীন অবস্থায় অক্সিজেন সরবরাহে কোনও সমস্যা তৈরি না হয়।
৩) অক্সিজেন প্ল্যান্টগুলি চালু রাখার ব্যবস্থা করা।
৪) হাসপাতাল, নার্সিং হোমে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত রাখতে হবে। ফাঁকা পরে থাকা অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলিতে দ্রুত অক্সিজেন ভরার ব্যবস্থা করতে হবে।
৫) যে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাঠানো হচ্ছে, সেগুলি ঠিক মতো কাজ করছে কি না, সেটা যাচাই করে দেখার দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের৷
৬) ভেন্টিলেটরস, বাইপ্যাপ, এসপিওটু সিস্টেমের মতো জীবনদায়ী মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি যাতে প্রয়োজনে সহজে উপলবদ্ধ হয়, সেই ব্যবস্থা করা৷
৭) অক্সিজেন সিলিন্ডার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছনোর পর সেগুলিকে সবার আগে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে৷
৮) অক্সিজেন সরবরাহের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত রয়েছে, তাঁদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা। দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং পেশাগত দক্ষতা সংক্রান্ত মন্ত্রক ইতিমধ্যেই অক্সিজেন প্ল্যান্টের কর্মীদের ১০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব৷ এ ছাড়াও দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ৪০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণে মাস্টার ট্রেনারের পাশাপাশি অক্সিজেন প্ল্যান্টের যে কোনও সমস্যা সমাধানে সক্ষম প্রশিক্ষিত কর্মী তৈরি করতে ১৮০ ঘণ্টা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। রাজ্য সরকার যেন প্রশিক্ষিত কর্মীই এ ক্ষেত্রে নিয়োগ করে।
৯) বেসরকারি চিকিৎসা পরিষেবাগুলির অক্সিজেনের যোগান দেওয়ার ক্ষমতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে৷
১০) অক্সিজেন সংক্রান্ত সমস্যার দ্রুত সমাধানে অক্সিজেন কন্ট্রোল রুম তৈরি করতে হবে৷
১১) যে সমস্ত চিকিৎসা কেন্দ্রে অক্সিজেন পরিষেবা মিলবে সেগুলির নাম ওডিএস ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নথিভুক্ত করতে হবে৷