শেষ বল পর্যন্ত লড়ে যাবেন ইমরান খান

ইতিমধ্যে ইমরান খানের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে আনা অনাস্থা প্রস্তাব নাকচ করে যে সিদ্ধান্তটি ডেপুটি স্পিকার দিয়েছিলেন তাকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করে বাতিল করে দিয়েছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপশি ইমরান খানের আহ্বানে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, তাও অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

এহেন সিদ্ধান্ত ইমরানের গদিচ্যুতি প্রায় নিশ্চিত করলেও পাকিস্তানের তেহরিক ই ইনসাফ (পিটিআই) দলের শীর্ষ নেতা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন বলে জানিয়েছে  সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে। এদিন তিনি এও জানিয়েছেন, “দেশবাসীর প্রতি আমার বার্তা হচ্ছে আমি সবসময় এবং ভবিষ্যতেও শেষ বল পর্যন্ত পাকিস্তানের হয়ে লড়বো।” 

উল্লেখ্য,ইমরানের বিরুদ্ধে খারিজ হয়ে যাওয়া অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট হতে চলেছে আগামীকাল শনিবার। তার আগেই নিজেকে পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছেন বিরোধী জোটের নেতা ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের ভাই শাহবাজ শরীফ। ডন মারফত জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে  প্রধানমন্ত্রী পদে শাহবাজ শরীফকে মনোনয়নও দেওয়া হয়ে গেছে। এবং মনোনয়ন পাবার পর শাহবাজ শরীফ জানিয়েছেন, যদি আগামীকাল পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে ইমরান খানকে পরাজিত করা যায়, তাহলে বিরোধী জোটের পক্ষ থেকে তিনি পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ।  

প্রসঙ্গত, ক্ষমতাসীন জোটের কয়েকজন সদস্য সমর্থন সরিয়ে নেয়ায় পার্লামেন্টে সংখ্যা গরিষ্ঠতা হারিয়েছে ইমরান খানের সরকার। পাকিস্থানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ইমরান সরছেন, এমন আগাম ধারণায় জাতীয় সরকারের মতো নতুন ফেডারেল সরকার গঠনের চিন্তা করছে বিরোধীদলগুলো। এতে আনুপাতিক হারে শরিক দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব থাকবে। নতুন সরকার গঠনের ক্ষেত্রে এর মেয়াদ ছয় মাস অথবা এক বছর রাখার বিষয়টি বিবেচনাধীন।

এদিকে, ইমরান খানের বিরোধীদের দাবি, ২০১৮ সালে সামরিক বাহিনীর সমর্থনে ক্ষমতায় এসেছেন ইমরান। এখন তাঁর মাথার ওপর থেকে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর ছায়া সরে গেছে। যদিও কোনো পক্ষই বিষয়টি স্বীকার করছে  না। এ বিষয়ে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বলেছেন, পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার মাধ্যমে ‘গুরুতর রাষ্ট্রদ্রোহ’ করেছেন ইমরান খান।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর ১৯৪৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের কোনো নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী তাঁর মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। জেনারেলরা নানা অজুহাতে রাষ্ট্রের শাসনভার নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছেন। তাই বিশ্লেষকেরা বলছেন, আগামীকাল শনিবার পাকিস্তানের ইতিহাসে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এদিন নির্ধারিত হবে ইমরান খানের ভাগ্য। হয় তিনি বিদায় নেবেন, নয়তো তাঁর ইতিহাস গড়ে পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার পথ সুগম হবে।