পূর্বেই ঘোষণা করা হয়েছিল যে নিম্নচাপের ফলে বিগত দুদিন ভারী বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে রাজ্যজুড়ে ও সমস্ত উপকূলবর্তী অঞ্চলে। জারি করা হয়েছিল সতর্কতা। পূর্ব ঘোষণাকে সত্যি করে বঙ্গোপসাগরের দুই দিনের প্রবল ঝড় ঝঞ্জায় ডুবেছিল এক এক করে কমপক্ষে ১০০টি বাংলাদেশি ট্রলার।
ভারতীয় মৎস্যজীবীদের তৎপরতায় সেই সমস্ত ডুবন্ত ট্রলার থেকে উদ্ধার করা হল অন্তত ৫০জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে। সম্প্রতি প্রশাসনের তরফ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে এই খবর জানানো হয়েছে।
এর সঙ্গেই আশঙ্কা করা হয়েছে যে আগামী দিনে উদ্ধারকারী বাংলাদেশী মৎস্যজীবীদের এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। জানা যাচ্ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় পাথরপ্রতিমা এবং রায়দিঘির ভারতীয় জলসীমা থেকে এই সমস্ত মৎস্যজীবীদের উদ্ধার করে এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গত দুদিন ধরে গভীর নিম্নচাপের কারণে যে প্রবল ঝড় বৃষ্টি হয়েছে ভারত এবং বাংলাদেশের উপকূলেবর্তী এলাকা গুলিতে তার জেরেই ওই ১০০টি বাংলাদেশি ট্রলার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। উদ্ধার হওয়া ওই মৎস্যজীবীদের শীঘ্রই রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
এরপর দুই দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে তাঁদেরকে বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে খবর। অন্যদিকে জানা যাচ্ছে, দিঘা থেকেও একইভাবে ৩ টি মাছ ধরার ট্রলারের ২৭ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার বাংলাদেশের ১১ মৎস্যজীবী ট্রলার ডুবে যাওয়ার পরে ভাসতে ভাসতে ভারতের জলসীমায় প্রবেশ করেন। শনিবার তা দেখতে পান ভারতের মৎস্যজীবীরা। তাঁদের উদ্ধার করে তুলে দেওয়া হয় বনদফতরের হাতে। এরপর রাতেও উদ্ধার করা হয় কয়েকজনকে।
এভাবে উদ্ধার করা হয় প্রায় ৫৫ জনকে।বনদপ্তরের তরফে উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশী মৎস্যজীবীদের সড়কপথে রায়দিঘিতে নিয়ে আসে। আপাতত তাঁদের রায়দিঘির সাউথ সুন্দরবন ফিশারমেন অ্যাসোসিয়েশনের অফিসে রাখা হয়েছে বলে খবর।
তবে বেশ কয়েকজন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। উদ্ধার হওয়া এক বাংলাদেশি মৎস্যজীবী জামাল সরদার ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে তাঁদের ট্রলারটি গভীর সমুদ্রে ডুবে গেলে তাঁরা সমুদ্রে ভাসতে থাকেন। ভাসতে ভাসতে ভারতীয় জলসীমার মধ্যে কখন ঢুকে পড়েছেন তা তাঁরা বুঝতেই পারেননি। ভারতীয় মৎস্যজীবীরাই তাঁদের উদ্ধার করে।