সম্প্রতি কেন্দ্র সরকরের তরফে ঘোষিত হয়েছিল নতুন প্রকল্প অগ্নিপথ৷ এই অগ্নিপথ প্রকল্প ঘোষণার পর থেকেই তোলপাড় শুরু দেশ জুড়ে৷ যার জেরে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে৷ জ্বলছে ট্রেনের পর ট্রেন৷ শুধু বিহারেই ক্ষতি ২০০ কোটি৷ এই প্রবল আন্দোলনের মুখে ইতিমধ্যেই অগ্নিপথ প্রকল্পে নিয়োগের শর্তে বদল এনেছে কেন্দ্র৷ এবার অগ্নিবীরদের জন্য আরও চার দফা সুবিধার কথা ঘোষণা করল সরকার৷ প্রশ্ন উঠছে, সেনার তিন শাখায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রকল্প নিয়ে আর কতটা পিছু হঠবে নরেন্দ্র মোদী সরকার?
কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং মঙ্গলবার অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণা করে জানান, সেনার তিন শাখায় (স্থল, নৌ ও বায়ুসেনা) সাড়ে ১৭ থেকে ২১ বছরের তরুণ-তরুণীদের অগ্নিবীর হিসাবে নিয়োগ করা হবে। এর পর বুধবার থেকেই শুরু হয় আন্দোলন৷ বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সাধারণভাবে ভারতীয় সেনায় অফিসার এবং জওয়ান নিয়োগের বয়সসীমা ১৮ থেকে ২৫ বছর। নতুন বয়ঃসীমায় অনেক যুবকই কাজের সুযোগ হারাবেন। তাছাড়া গত দু’ বছর সেনায় নিয়োগ বন্ধ থাকায় চাকরি প্রার্থীদের বয়সও বেড়ে গিয়েছে৷ এর পরেই প্রথম বছরের জন্য অগ্নিবীরদের বয়সসীমায় ২ বছর ছাড় দিয়ে ২৩ বছর করার কথা ঘোষণা করা হয়৷
অগ্নিপথ প্রকল্পে নিয়োজিত চুক্তিভিত্তিক ‘অগ্নিবীর’দের ৭৫ শতাংশকেই চাকরি পাওয়ার চার বছরের মধ্যে অবসর নিতে হবে। তাঁদের এক কালীন কিছু টাকা দেওয়া হলেও থাকছে না পেনশনের সুবিধা৷ বলা হয়েছিল, কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (বিএসএফ, সিআরপিএফ, সিআইএসএফ, আইটিবিপি এবং এসএসবি)-তে নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘অগ্নিবীর’দের অগ্রাধিকার দেওয়ার হবে৷ কিন্তু তাঁরা প্রাক্তন সেনাদের সমান সুযোগ-সুবিধা পাবেন কি না, সেটা স্পষ্ট ছিল না।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ঘোষণা করে, কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী এবং অসম রাইফেলসে অগ্নিবীরদের জন্য ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। পাশাপাশি, ‘অগ্নিবীর’দের প্রথম ব্যাচের জন্য ৫ এবং পরবর্তী ব্যাচগুলির জন্য ৩ বছর বয়স ছাড় দেওয়া হবে৷ বর্তমানে কেন্দ্রীয় বাহিনীতে যোগদানের বয়ঃসীমা ২০-২৫ বছর। অর্থাৎ চার বছর পর অবসর নেওয়া ‘অগ্নিবীর’রা বয়সের দিক থেকে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী এবং অসম রাইফেলসে যোগদানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন না।
শুধু তাই নয়, শনিবার রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, তাঁর মন্ত্রকে অগ্নিবীরদের জন্য ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রাখা হবে৷ এবং অবসর গ্রহণের পরেও অগ্নিবীররা তাঁদের পদমর্যাদা ব্যবহারের সুযোগ পাবেন৷ তাঁরা আজীবন ‘অগ্নিবীর’ পরিচয় বহন করতে পারবেন৷