দেশে ৫ রাজ্যের বিধানসভার ভোটের ফল বেরনোর পর থেকেই চড়চড় করে বেড়েছে জ্বালানীর দাম। এরইমাঝে গতকাল বুধবার বাংলা সহ বেশ কয়েকটি অবিজেপি রাজ্যগুলিকে নিশানা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পেট্রোল-ডিজেলের দাম আকাশছোঁয়া। কেন্দ্রীয় সরকার শুল্ক কমিয়েছে, রাজ্যগুলিকেও অনুরোধ করা হয়েছিল। কিছু রাজ্য পেট্রোল-ডিজেলের ভ্যাট না কমানোয় মানুষের প্রতি অন্যায় হচ্ছে’। এরপরেই উদাহরন দিয়ে মোদী জানান, কলকাতায় যেখানে পেট্রোলের দাম ১১৫ টাকার বেশি, সেখানে লখনওতে পেট্রোল দাম ১০৫ টাকা। এরপরেই ওই রাজ্যগুলির প্রতি মোদীর আবেদন, “গত নভেম্বরে কথা থাকলেও তা হয়নি। এখন অন্তত ভ্যাট কমিয়ে নাগরিকদের সুবিধা দিন।”
কিন্তু পেট্রোল- ডিজেলের এই মূল্যবৃদ্ধির জন্য কেন্দ্র সরাসরি রাজ্যকে দায়ী করলেও, দেখা মিলছে, পেট্রোল- ডিজেলের উপরে বিপুল কর চাপিয়ে কেন্দ্রের কাছে বেশি মুনাফা ঢুকছে। পেট্রোলিয়াম ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম কর্তা টুলটুল সেন প্রথমসারির এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বুধবার কলকাতায় এক লিটার পেট্রোলের দাম ছিল ১১৫.১২ টাকা৷ এর মধ্যে জ্বালানির মূল দাম ৬১.৫৩ টাকা কেন্দ্রের কর ২৭.৯০ টাকা, রাজ্যের কর ২২.৩০ টাকা। ডিলারের কমিশন থাকছে ৩.৩৯ পয়সা। অন্যদিকে ডিজেলের ক্ষেত্রে বুধবার কলকাতায় এক লিটার ডিজেলের দাম পড়েছে ৯৯.৮৩ টাকা। এর মধ্যে জ্বালানির মূল দাম ছিল ৬১.৭২ টাকা। কলকাতায় এক লিটার ডিজেল বিক্রি হলে কর বাবদ কেন্দ্রীয় সরকার পাচ্ছে ২১.৮০ টাকা। রাজ্য কর বাবদ পাচ্ছে ১৪.১৮ টাকা। কমিশন বাবদ ডিলার পাচ্ছেন ২.১৩ টাকা।
তবে দীর্ঘদিন ধরেই পেট্রোল-ডিজেলের উপরেও জিএসটি বসানোর দাবি উঠলেও সেই দাবিতে যেমন সাড়া দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার তেমনি এ বিষয়ে কুলুপ এঁটেছে রাজ্যগুলিও। কারন, পেট্রোল-ডিজেলের উপরে জিএসটি বসানো হলে অভিন্ন হারে কর চাপবে। এরফলে জ্বালানি বিক্রি থেকে কেন্দ্র-রাজ্য দু’ পক্ষেরই আয় অনেকটা কমে যাবে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।