বড় খুশির খবর রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের জন্য৷ নিয়ম মেনেই জুলাই মাসে হচ্ছে বাৎসরিক বেতনবৃদ্ধি৷ শুক্রবার বিধানসভায় ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য৷ রাজ্য বাজেটে বেতন খাতে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে৷ বরাদ্দ বৃদ্ধিতেই মিলেছে বেতন বৃদ্ধির ইঙ্গিত।
গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট, বাজেট প্রস্তাবের চেয়ে বাস্তবে সরকারের খরচ হয় অনেক বেশি৷ তাই বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধির জন্যে বরাদ্দের থেকে অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন হলে সরকারের তরফে তা দেওয়া হবে বলেই সূত্রের খবর। চলতি বছর এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করা হয়নি। এই বিষয়টি তুলে ধরেই বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধির সুবিধাও মিলবে না বলে প্রচারে নেমেছে বিরোধীরা৷ বেতন বৃদ্ধি হবে না বলে দাবি করেছে বেশ কয়েকটি সরকারি কর্মী সংগঠনও। বিরোধীদের এই দাবি নেহাতই যে অমূলক তা বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি করে বুঝিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার৷
ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের বর্ধিত হারে বেতন দেওয়া শুরু হয় ২০২০ সালের জানুয়ারি মাস থেকে। অর্থ দফতরের ‘রোপা ১৯’-এর বিজ্ঞপ্তিতে প্রতি বছর পয়লা জুলাই সরকারি কর্মচারীদের ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে ওই বিজ্ঞপ্তিতে ডিএ বৃদ্ধি কিংবা কোন হারে বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধি হবে, সেই বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি৷ তবে সাধারণত সরকারি কর্মচারীরা ৩ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পান৷ অর্থদফতরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী চুক্তি ভিত্তিক কর্মচারীদেরও একই হারে বেতন বৃদ্ধি হয়।
সরকারি কর্মীদের বর্তমান যে বেতন হার, তাতে এক শতাংশ বৃদ্ধির জন্য সরকারের মাসে খরচ হবে ৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে ৭৬৮ কোটি টাকা। সেই নিরিখে মূল বেতনের ভিত্তিতে ৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধিতে সরকারের বছরে খরচ হবে প্রায় ২,৩০০ কোটি টাকা। এবারের বাজেট প্রস্তাবে ’২২-২৩ অর্থবর্ষের জন্য বেতন খাতে ৬০ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যা গত অর্থবর্ষের তুলনায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বেশি।
তবে মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে৷ বাজেট পেশের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে এটা বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক বঞ্চনার জন্য ডিএ দেওয়া যাচ্ছে না। এমনকী তিনি বহুবার এটাও বলেছেন যে, সরকারের আর্থিক পরিস্থিতি ভালো হলে নিজে থেকেই ডিএ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করা হবে৷