করলা নদী থেকেই মিলছে সোনা, রুপা, তামা!হৈ চৈ পড়ে গিয়েছে জলপাইগুড়িতে

করলা নদী থেকেই মিলছে সোনা, রুপা, তামা! কারা পাচ্ছে সেসব? ইতিমধ্যেই এই কাণ্ডকে ঘিরে হৈ চৈ পড়ে গিয়েছে জলপাইগুড়িতে। নদী বুক চিড়ে বালির বদলে মিলছে পয়সা সহ মূল্যবান সব ধাতু।শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে করলা নদী। ঠিক তার থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে অপর নদী তিস্তা।জলপাইগুড়ি শহরের এই দুই নদীতে ছিপ কিংবা জাল দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য খুবই সাধারণ। কিন্তু, জলে নেমে আবর্জনা এবং মাটি সংগ্রহের কাণ্ড-কীর্তি দেখে হতবাক অনেকেই। তবে এমনই দৃশ্য দেখা গেল জলপাইগুড়ি শহরের বাবুঘাটে।

ভরা করলা নদীতে নেমে জল থেকে কড়াই, ঝুড়িতে করে নদী থেকে মাটি তুলছেন আনছেন বয়স্ক কয়েক ব্যক্তি। তাকে প্রশ্ন করতে উত্তরে ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায় জানান, “পয়সা তুলছি আর সোনা খুঁজছি। এটাই আমার রুটি-রুজি।”। দেখা যাচ্ছে সারাদিন করলা নদীর মধ্যে বিভিন্ন ঘাট থেকে পাথর নুড়ি সংগ্ৰহ করে সেখান থেকে মিলেছে কয়েন এক ও দু’ টাকা। কোথাও কিছু লোহা মিলছে।কিন্তু কোথা থেকে মিলছে এই ধাতুগুলি? স্থানীয়দের প্রাথমিক অনুমান, প্রতি বছর করলা নদীর বিভিন্ন ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন হয়। প্রতিমার গাঁয়ে বিভিন্ন লোহার সামগ্রী থেকে শুরু করে কোথাও কিছু রুপার জিনিস বা কোথাও সোনা থাকে। প্রতিমা বিসর্জনের পর সেগুলিই মিশে যায় নদীর মাটির সঙ্গে। সেই সব জিনিসপত্রই সংগ্ৰহ করেন তারা। এভাবেই চলে জীবিকা নির্বাহ।তবে এভাবে রোজই কি সোনা মেলে?  এই প্রশ্ন শুনে মুচকি হেসে তাদেরই একজন রামপ্রসাদ জানান, রোজ সোনা না মিললেও, মা করলা কোনওদিন খালি হাতে ফেরায় নি। তাদের বিশ্বাস, করলার আশীর্বাদেই তাদের সংসার এখনও বেঁচে রয়েছে।

স্থানীয় অনেকের কাছেই জানা যায়, তাদের  পূর্ব পুরুষেরাও এই কাজের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন।অভাবী মানুষ হয়েও মুখে হাসি রেখে বছরের পরে বছর ধরে এই সব  সংগ্রহ করেই নিজের ও পরিবারের পেট চালাচ্ছেন সেখানকার বহু পরিবার। কুঁড়ে ঘরে থেকে এভাবে সারাদিন কঠোর পরিশ্রম সংসার চালান তারা। করলা নদী থেকে মূল্যবান ধাতু কিংবা কয়েন সংগ্রহ করাই তাদের মূল জীবিকা।