টানা ৯ দিন ধরে বন দপ্তরকে নাকানি-চোবানি খাইয়ে অবশেষে ধরা দিল ওডিশার বাঘিনি জিনাত। শেষ হয় বাঘ-বন্দি খেলা। ওডিশার সিমলিপাল থেকে জিনাত প্রথমে আসে ঝাড়খণ্ডে। সেখান থেকে পুরুলিয়া হয়ে বাঁকুড়ার জঙ্গলে চলে আসে বাঘিনি। শনিবার বাগে পেয়েও সেটিকে কাবু করতে পারেনি বনকর্মীরা। রবিবার বিকেলে বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহিতে চতুর্থ ঘুমপাড়ানি গুলি খেয়ে ধরা দেয় বাঘিনি। এদিন রাতেই সেটিকে কলকাতায় আলিপুর চিড়িয়াখানার পশু হাসপাতালে আনা হয় চিকিৎসার জন্য। জিনাতকে সুস্থ করেই ফের তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে ওডিশার সিমলিপাল জঙ্গলে। শনিবারই বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর থেকে গোঁসাইডিহিতে ঢুকেছিল বাঘিনি। সেই রাতেই বাঘের গর্জন শুনতে পেয়ে গ্রামবাসীরা খবর দিয়েছিল বনদপ্তরে। সেই রাতেই জিনাতকে লক্ষ্য করে তিনটি ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়েন বনকর্মীরা। জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় এলাকা। জ্বালানো হয়েছিল আগুন। ঘুমপাড়ানি গুলি খেয়েও পালিয়ে যায় জিনাত। শেষে রবিবার বিকেলে চতুর্থ ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয় জিনাতকে লক্ষ্য করে। এরপরই সেখানে লুটিয়ে পড়ে জিনাত। বন্দি হয় বাঘিনি।
বাঘ-বন্দি খেলা শেষের পর সড়কপথে জিনাতকে নিয়ে আলিপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় বন দপ্তর। রাত ১২ টা ১০ মিনিটে বিশেষ কনভয় নিরাপত্তায় পৌঁছায় আলিপুরের পশু হাসপাতালে। আসার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় চিকিৎসা। পরামর্শ নেওয়া হয় ওডিশা বন দপ্তরের। সেই রাজ্যের পশু চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করেই চিকিৎসা চলছে জিনাতের। আলিপুরের পশু হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত ৯ দিন ধরে দীর্ঘ পথ ঘুরে, মানুষের তাড়া খেয়ে ক্লান্ত বাঘিনি। এই কয়েকদিনে ঠিকমতো খাবার পায়নি সে। তাই এখন দরকার সঠিক খাবার এবং বিশ্রাম। তার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে। আলাদা এনক্লোজারে রেখে চিকিৎসা চলছে বাঘিনির। সেই সঙ্গে দুইদিনে চারবার ট্রাঙ্কুলাইজ করার কারণে জিনাতের শরীরে কতটা প্রভাব পড়েছে তা খতিয়ে দেখছেন চিকিৎসকরা। তবে, ঘুমের গুলির প্রভাব কাটিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে কিছুটা সময় লাগবে তিন বছরের জিনাতের। কবে সেটিকে ওডিশায় ফেরত পাঠানো হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।