রাজ্য সরকারের সঙ্গে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের দ্বিতীয় দফার বৈঠকের পরেও দুপক্ষ বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য না হওয়ায় আপাতত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন। জানা গেছে জুনিয়র ডাক্তারদের অন্যতম মূল দাবি কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার ব্যাপারে রাজ্য সরকার তাদের সবরকম ভাবে আশ্বস্ত করেছে। তবে স্বাস্থ্য সচিবের অপসারণ বা তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরুর ব্য়ারে কোনো স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়নি। তাই আপাতত কর্মবিরতি চলবে বলে তারা জানিয়েছেন। বৈঠক শেষে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর নবান্ন থেকে বেরিয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়েছেন, বৈঠকে কিছু দাবি মানা হলেও কোনও মিনিটস দেওয়া হয়নি। শুধু মৌখিক আশ্বাস মিলেছে। তাই কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত থেকে তাঁরা সরে আসবেন না।
আরজি কর কাণ্ডের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সরকারের আদৌ কোনও সদিচ্ছা আছে কিনা তা নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। নবান্নে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ সহ শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত টাস্ক ফোর্সের দুঘন্টার বেশি দীর্ঘ বৈঠকে এই বিষয়ে সরকারের গৃহীত একাধিক পদক্ষেপ জুনিয়র ডাক্তারদের ৩০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সামনে তুলে ধরা হয়। হাসপাতালে দালাল রাজ বন্ধ করা, নিরাপত্তার দায়িত্বে চুক্তিভিত্তিক কর্মী না রাখার মত তাঁদের কয়েকটি দাবিতে রাজ্য সরকার সম্মতি দিয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে। জুনিয়র চিকিৎসকরা বৈঠকে নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি কমিটি গড়ার প্রস্তাব দিলে তাতে তাৎক্ষণিক সম্মতি দেওয়া হয়েছে। তবে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্ত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য রাজ্যের তরফে কিছুটা সময় চেয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিগুলি মানার বিষয়ে নির্দিষ্ট সরকারি সার্কুলার জারি করার দাবি বৈঠকে জানিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার মহিলা চিকিত্সক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের দের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রশিক্ষিত মহিলা পুলিশ বাহিনী উইনার্সের সদস্যদের কাজে লাগানোর কথা বলেন। মুখ্যসচিব ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, কলকাতার পুলিশের নতুন কমিশনার মনোজ বর্মা, রাজ্য পুলিশের এডিজি আইন-শৃঙ্খলা জাভেদ শামিম।জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠক করার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে টেলিফোনে রিপোর্ট দেন মুখ্যসচিব।