রাজ্যের শাসক দলের বড় পদের মন্ত্রিত্ব থেকে বর্তমান স্থান জেল। ক’দিন আগেও তিনি ছিলেন সরকারের সেকেন্ড ইন কমান্ড৷ শাসক দলের মহাসচিবের গর্জনে বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খেত৷ এহেন দাপুটে নেতাই এখন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি৷
এক মাস হতে চলল তাঁর গ্রেফতারির৷ এক পক্ষকাল তাঁর ঠিকানা প্রেসিডেন্সির সংশোধনাগার৷ জেলের কালকুঠুরিতে বন্দি থাকলেও, মেজাজ কমেনি এতটুকু৷ আদালতকে তেমনটাই জানালেন ইডি-র আইনজীবী৷ তিনি জানান, জেলে জিজ্ঞাসাবাদের সময় জবানবন্দির নথি ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবারই পার্থ ও অর্পিতার জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষ হয়৷ ওই দিনই আদালতে পেশ করা হয় তাঁদের৷ সেই সময়ই ইডির আইনজীবীর দাবি, তদন্তে অসহযোগিতা করছেন পার্থবাবু। তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে নোটের পাহাড়৷
এই বিপুল অর্থের উৎস কী, তা জানাতে অস্বীকার করেছেন তিনি। আদালতে পেশের আগে বুধবার প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে পার্থকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন ইডি-র গোয়েন্দারা। অর্পিতার জীবনবিমার প্রিমিয়ামের নোটিফিকেশন কী ভাবে তাঁর ফোনে এল, সে বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়৷
কিন্তু, এব্যাপারেও কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি৷ জিজ্ঞাসাবাদ পর্বের পর নথিভুক্ত বয়ানের কাগজ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দিয়ে সই করাতে এগিয়ে যান ইডির এক আধিকারিক। তখনই সেই নথি কেড়ে ছিঁড়ে ফেলেন প্রাক্তন মন্ত্রী৷
বৃহস্পতিবার আদালতে ইডি আধিকারিকরা আরও জানান, পার্থের নামে ৬০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও ৩০টি ভুয়ো কোম্পানির হদিশ মিলেছে৷ এমনকী উত্তর ২৪ পরগনায় পার্থ ও অর্পিতার যৌথ মালিকানায় একটি পিকনিক স্পটও খুঁজে পেয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা৷
এখানেই শেষ নয়, পশ্চিম মেদিনীপুরে স্ত্রীর বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে স্কুল খোলার নামে প্রাক্তন মন্ত্রী কোটি কোটি টাকা পাচার করেছেন বলেও দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির।