চলতি বছরের শুরুতেই আসন্ন গঙ্গাসাগর মেলা। বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণের মাঝেই আগামী ৬ থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত গঙ্গাসাগর মেলা হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এই মেলাকে কেন্দ্র করে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। পরশু অর্থাৎ বুধবার প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি। মামলা দায়ের করে দাবি করা হয়েছে, মেলায় মানা হচ্ছে না করোনা বিধি। একই সঙ্গে, বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত পুণ্যার্থীদের মধ্যে কোন রকম শারীরিক বা সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকছে না। এই মামলা করেছেন চিকিৎসক অভিনন্দন মণ্ডল।
কিছুদিন আগেই মেলার প্রস্তুতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে তিনদিনের সফরে গঙ্গাসাগরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেখানে তিনি বলেন, গঙ্গাসাগরও বাংলার একটা বড় উৎসব৷ গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় উৎসব করার আর্জি জানিয়ে বহুবার কেন্দ্রকে চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি জানান, কুম্ভ মেলার যাবতীয় খরচ কেন্দ্রীয় সরকার দেয়৷ কিন্তু গঙ্গাসাগর মেলার জন্য একটা টাকাও দেয় না৷ কিন্তু করোনা ভাইরাসের নতুন করে এতটাও বাড়াবাড়ি হয়নি। কিন্তু এখন এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে মেলা হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। গোটা বিষয়ে হাইকোর্টে মামলাকারীর দাবি, রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, এই মেলায় বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ একত্রিত হয়ে থাকেন।
৩০ লক্ষের বেশি জনসমাগম হয়ে থাকে। ফলে এমন জনসমুদ্রে দূরত্ববিধি-সহ অন্যান্য কোভিড প্রোটোকল মানা সম্ভব নয়। এবারও একই পরিমাণ ভিড় হলে আরও বাড়বে গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা। ফলে ভেঙে পড়তে পারে চিকিৎসা পরিষেবা। এই বিপুল পরিমাণ মানুষকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে না। কারণ লাগাতার পরিষেবা দিতে দিয়ে চিকিৎসকরাও এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। তাই অভিনন্দন মণ্ডলের আর্জি, অতিমারীর ভয়াবহতার কথা মাথায় রেখে এবারের মতো গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ রাখা হোক।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কারণ বহু সংখ্যক চিকিৎসকরা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। কলকাতা মেডিক্যেল কলেজের রিজিওনাল ইন্সটিটিউট অফ অফথ্যালমোলজির ১২ জন চিকিৎসক। অন্যদিকে, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং রোগী-সহ মোট ৬১ জন কোভিড পজিটিভ হয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। চিত্তরঞ্জন শিশু সেবা সদন, আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজ থেকেই আগেই ভাইরাস আক্রান্তের খবর এসেছিল। বিগত ৩-৪ দিনেই রাজ্যের করোনা গ্রাফ হু হু করে বেড়েছে। তাই এখন গঙ্গাসাগর মেলা হলে আগামী কয়েক দিন কোভিড আরও ভয়াবহ হতে পারে বলেই আশঙ্কা।