নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বছরের প্রথম দিন পিকনিকের হুজুগ দেখা যায় প্রতিবারই। বুধবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি আলিপুরদুয়ারে। তবে এবছর তাতে উচ্ছৃঙ্খলতার মাত্রা ছিল বেশি। বলছেন ভুক্তভোগীরাই। পয়লা জানুয়ারিতে আলিপুরদুয়ার জেলাজুড়ে পিকনিক স্পটগুলোয় ভিড়ের চেনা ছবিই ধরা পড়েছে। আর সেইসঙ্গে দেখা গিয়েছে মদ্যপদের হুজ্জতি আর বেপরোয়া বাইকবাজদের দাপাদাপি। সাউন্ড বক্সের দাপট তো ছিলই। বক্সা টাইগার রিজার্ভের মাঝে আলিপুরদুয়ার শহর সংলগ্ন দক্ষিণ পোরো ইকো পার্কে ভিড় যেমন ছিল, মদ্যপদের দৌরাত্ম্যও ছিল সমানতালে। আর তার ফলে যাঁরা সেখানে পরিবার নিয়ে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন, তাঁরা সমস্যায় পড়েন।জঙ্গলের পাশে হওয়া সত্ত্বেও ওই পিকনিক স্পটে মাইকের শব্দ নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থাই ছিল না। বাকিরা প্রতিবাদ করবেন কী? আতঙ্কে টুঁ শব্দটিও করতে পারেননি।
আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের চিলাপাতায় ‘মনের মানুষ’ পিকনিক স্পটে এবছর পিকনিক নিষিদ্ধ করেছে বন দপ্তর।কুমারগ্রাম ব্লকের বারবিশা, পূর্ব চকচকা এবং জয়দেবপুর টাপুতে রায়ডাক নদীর পাড়ে প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে বহু উৎসাহী মানুষ পরিবারপরিজন এবং বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে পিকনিক করতে আসেন। তবে সেখানেও দেখা গিয়েছে লাউডস্পিকারের দাপট। এলাকার পিকনিক স্পটগুলিতেও ভিড় হয়। কেউ এসেছিলেন বীরপাড়া, কেউ ফালাকাটা, আবার কেউ এসেছিলেন কুমারগ্রাম থেকে। জয়গাঁয় তোর্ষা পাড়ের পিকনিক স্পটগুলির পাশাপাশি মহুয়া, মোচিডাঙ্গা, রণবাহাদুর বস্তিতেও ভালো ভিড় হয়। ভিড় ছিল ফালাকাটার কুঞ্জনগরেও। শান্তিরক্ষায় সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। কুঞ্জনগরের বিট অফিসার সনৎ শূর বলেন, ‘২৫ ডিসেম্বর থেকেই পর্যটক এবং পিকনিকের দল আসছে।
আমরা ঝোপজঙ্গল পরিষ্কার করেছি।’ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে লঙ্কাপাড়া পিকনিক স্পটও। নতুন বছরের প্রথমদিনে ভুটান সীমান্তের ওই চা বাগানে পিকনিক করতে যান আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন প্রান্তের লোকজন। কামাখ্যাগুড়ি শহরের বাইরে পারোকাটা, খোয়ারডাঙ্গা, কামাখ্যাগুড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন নিরিবিলি জায়গায় এদিন পিকনিক হয়েছে। সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর যাতে কেউ পিকনিক না করতে পারে, তার জন্য বছরের প্রথম দিন জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় কড়া নজরদারি চালিয়েছে বন দপ্তর। সাউথ রায়ডাক রেঞ্জের বনকর্মীরা এদিন বক্সা ব্যাঘ্র-প্রকল্পের নারারথলি, ছিপরা জঙ্গলে ঢোকার রাস্তাগুলিতে কড়া নজরদারি চালিয়েছেন। এর ফলে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভিতরে পিকনিক করতে পারেননি কেউ। তবে তাঁরা রায়ডাক নদীর পাড়ে পিকনিক করেছেন।