কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে প্রায় তিন মাস ধরে বন্ধ হেপাটাইটিস ‘বি’, হেপাটাইটিস ‘সি’ এবং এইচআইভি পজ়িটিভ রোগীদের ডায়ালিসিস। এ জন্য প্রায় প্রতিদিনই জটিল রোগগুলিতে আক্রান্ত রোগীরা ফিরে যাচ্ছেন। এই রোগীদের ডায়ালিসিস করার জন্য যে মেশিনটি ছিল, তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি বলে জানা গিয়েছে। যদিও দীর্ঘদিন ধরে মেশিন খারাপ হয়ে পড়ে থাকলেও তা ঠিক করার কিংবা বিকল্প ব্যবস্থা করে দেওয়ার কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ। এ নিয়ে কাঠগড়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে সব মিলিয়ে পাঁচটি ডায়ালিসিসের মেশিন রয়েছে। ২০১৫ সালে এই ইউনিট চালু হয়। পাঁচটির মধ্যে দু’টি মেশিন হেপাটাইটিস ‘বি’, ‘সি’ ও এইচআইভি পজ়িটিভ রোগীদের জন্য বরাদ্দ ছিল। এই দু’টি মেশিন প্রায় তিন মাস ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। এতেই বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। পিপিপি মডেলে চলা এই ইউনিটের মেশিন খারাপ হলেও তা সারাতে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ।
সরকারি হাসপাতালে বিনাপয়সায় চিকিৎসা না পেয়ে ঘুরছেন বহু রোগী। সব মিলিয়ে গত তিন মাসে ৫০ জনের বেশি রোগী ফিরে গিয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। যদিও বিষয়টি নিয়ে হেলদোল নেই কারও। অন্যান্য রোগীদের জন্য এখন এই হাসপাতালে মাত্র তিনটি ডায়ালিসিস মেশিন চালু রয়েছে। এই সংখ্যা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। একটি রোগীকে ডায়ালিসিস করতে দু’–তিন ঘণ্টা সময় লাগে। তাই এখানে রোগীর চাপ রয়েছে অনেক বেশি। শুধু কোচবিহার জেলা নয়, পার্শ্ববর্তী আলিপুরদুয়ার জেলা এবং নিম্ন অসম থেকেও বহু মানুষ এখানে আসেন। তাই রোগীদের পরিষেবা দিতে একপ্রকার হিমশিম অবস্থা বিভাগীয় কর্মীদের। রোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকে পরিষেবা উন্নত করার দাবি উঠলেও বাস্তবে তা হয়নি।
যে দু’টি মেশিন খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে, তা কেন সারাই করা হচ্ছে না। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে বিস্ফোরক তথ্য সামনে এসেছে। এখন যে এজেন্সির সঙ্গে চুক্তি রয়েছে, তার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। নতুন ১৫ ইউনিটের যে ডায়ালিসিস ইউনিট চালু হবে, সেখানে অন্য একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তাই মেশিন খারাপ থাকলেও চুক্তিবদ্ধ না–হওয়ায় পুরোনো কোম্পানি আর মেশিন ঠিক করার ব্যয় বহন করতে চাইছে না। রোগীদের সমস্যা হলেও কর্তৃপক্ষ তেমন তৎপর নন। এমএসভিপি সৌরদীপ রায় বলছেন, ‘১৫ বেডের ডায়ালিসিস ইউনিট চালু হলেই সব সমস্যা মিটে যাবে।’ কয়েকদিন আগেই এখানে ১৫ বেডের ডায়ালিসিস ইউনিট চালুর কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তার প্রক্রিয়া চললেও কবে রোগীরা পরিষেবা পাবেন, তার দিনক্ষণ এখনও জানা যায়নি। ফলে সে দিকেই তাকিয়ে রোগীদের পরিবার।