আর মৃত্যুদণ্ড পেতে হবে না এই দেশে

দোষীদের আর মৃত্যুদণ্ড পেতে হবে না এই দেশে। মালয়েশিয়ায় হত্যা, মাদক পাচার-সহ বিভিন্ন অপরাধে্ দোষী সাব্যস্ত হলে এতদিন পর্যন্ত অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হত। মৃত্যুদণ্ডের মতো চরম শাস্তি প্রত্যাহারের জন্যে দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে এসেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। একই দাবি তুলেছেন সমাজকর্মীরাও। যে অপরাধগুলিতে মৃত্যুদণ্ড বাধ্যতামূলক ছিল এবার মালয়েশিয়া সরকার তা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন সংসদে চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষা। মালয়েশিয়া সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে মালয়েশিয়ার বিরোধী রাজনৈতিক দল। খুশি মানবাধিকার কর্মী এবং সমাজকর্মীরা।

খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে কিংবা মাদক পাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয় মালয়েশিয়ায়। দীর্ঘদিন ধরেই চরম শাস্তির এই ব্যবস্থা কার্যকর হয়েছে। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলি সমান্তরাল দাবি জানিয়ে আসছিল, মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাহার করে নিতে হবে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার সরকার জানিয়েছে, এবার থেকে খুন কিংবা মাদক পাচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে না। ফলে খুশি মানবাধিকার কর্মীরা।

২০১৮ সালে মালয়েশিয়ায় ক্ষমতাসীন হয়েছে সংস্কারপন্থী জোট। এরপরই সরকারের তরফে জানানো হয়েছি, খুন, মাদক পাচার-সহ যে অপরাধগুলিতে দোষী সাব্যস্ত হলে মৃত্যুদণ্ডের মতো চরম শাস্তির বিধান তারা প্রত্যাহার করে নেবে। কিন্তু সরকার এই প্রতিশ্রুতি নানা বাধার মুখে বাস্তবায়িত করতে পারেনি। অন্যতম প্রধান কারণ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির তীব্র আপত্তি। এছাড়া যে সমস্ত নাগরিক খুন হয়েছে মৃত্যুদণ্ডের বিধান প্রত্যাহারের ব্যাপারে তাঁদের পরিজনরাও তুমুল আপত্তি তুলছিলেন।

মালয়েশিয়ার আইন মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভা সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে অপরাধগুলির ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে মৃত্যুদণ্ডের মতো চরম শাস্তি এতদিন পর্যন্ত কার্যকর হয়েছে সেই কঠোর আইন প্রত্যাহার করা হবে। সরকার এখন ভাবনাচিন্তা করছে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে অন্য কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কার্যকর করা যেতে পারে। এব্যাপারে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। মালয়েশিয়া সরকার জানিয়েছে, মৃত্যুদণ্ডের মতো চরম শাস্তি প্রত্যাহারের বিষয়টি এবার সংসদে আইনি সংশোধনী অনুমোদন করানো হবে। বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে সরকার উদ্যোগী হলেও কোন কোন ক্ষেত্রে অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে তা নির্ভর করছে ওই মামলাগুলির বিচারকদের নির্দেশের ওপর।

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তরফে মালয়েশিয়া সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানানো হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠন এবং সমাজকর্মীরা মালয়েশিয়া সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। যদিও মালয়েশিয়ায় ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার রক্ষা ইস্যুতে মানবাধিকার এবং সমাজকর্মীদের অভিযোগ, মালয়েশিয়া সরকার মানবাধিকার রক্ষা ইস্যুতে এর আগেও গালভরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যদিও সরকারের মেয়াদ চার বছর পেরোলেও সরকার প্রতিশ্রুতিগুলি রক্ষা করেনি। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী রাজনৈতিক দলের তরফেও মৃত্যুদণ্ড বিলোপের বিষয়টিকে স্বাগত জানানো হয়েছে।