দিন প্রতিদিন চিন্তা বাড়ছে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা নিয়ে। ঠিক যে সময় মনে হয়েছিল যে করোনা বিদায় নিচ্ছে, সেই সময় দাপট দেখাতে শুরু করল ওমিক্রন প্রজাতি। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে তা ছড়িয়ে পড়ল প্রায় গোটা বিশ্বে। মারাত্মক সংক্রামক এই প্রজাতি নিয়ে এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর অজানা। গবেষণা চললেও একটি মূল বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কিছু নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি, যা হল নতুন টিকা দরকার কিনা এই প্রজাতি রুখতে। বিশ্বজুড়ে একাধিক গবেষণায় ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, বাজারে চলতি টিকাগুলি এই ওমিক্রন রুখতে কার্যকরী নয়। তাই স্বাভাবিকভাবেই এখন প্রশ্ন, তাহলে কি নতুন টিকা আনা উচিত?
ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে এমন টিকা তৈরির প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে মডার্না নামক সংস্থা। কোভিডের নয়া রূপগুলির বিরুদ্ধে যে চলতি ভ্যাকসিন কার্যকরী হবে না তা তারা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিল। এই সংস্থার পাশাপাশি ফাইজারও এই নতুন টিকা নিয়ে যাবতীয় গবেষণা, পরীক্ষা করা শুরু করে দিয়েছে। তাদের দাব, ওমিক্রন রূপে অন্তত ৫০ টি মিউটেশন রয়েছে যা এটিকে প্রথম দিকের ভাইরাসের রূপের চেয়ে আলাদা করে। তাই ওইসব ভাইরাস রুখতে যে টিকা রয়েছে তা এই রূপের বিরুদ্ধে কাজ করবে না বলেই একপ্রকার নিশ্চিত তারা। কারণ এই ভ্যাকসিনগুলি ওমিক্রন প্রজাতির ধরা পড়ার অনেক আগেই এসে গিয়েছে। তাই এই রূপের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা তাদের নেই।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ সম্প্রতি এক সমীক্ষায় জানিয়েছে, ওমিক্রন সংক্রমণের ফলে শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি ডেল্টা-সহ অন্যান্য রূপের সংক্রমণ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে। সেই জন্য ওমিক্রন-ভ্যাকসিন তৈরিতে তারা জোর দিতে চাইছে যাতে আরও বেশি করে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে পারে। নতুন টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করেছে ফাইজার, বায়োএনটেকের মতো টিকা সংস্থা। তাঁদের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, ওমিক্রন প্রজাতি নিয়ে এখনও বিস্তর গবেষণা বাকি যা চলছে। তাই এই মুহূর্তে এই প্রজাতি নিয়ে অসচেতন হওয়ার সময় একদম আসেনি। যে কোনও সময়েই এটি ভয়ানক রূপ নিয়ে নিতে পারে। আর তা হলে অবশ্যই জটিল অবস্থার সৃষ্টি হবে আবার। এখন যে টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া হচ্ছে সেটাও তাকে ঠেকাতে পারবে না বলেই ধরে নেওয়া হয়েছে।