যুদ্ধ পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়ছে ভারতীয় পড়ুয়াদের নিয়ে

বিগত আটদিন ধরে যুদ্ধ চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মাঝে৷ যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে হাজার হাজার ভারতীয় পড়ুয়া৷ তাঁদের ঘরে ফেরা নিয়ে উদ্বেগে গোটা দেশ৷ এরই মধ্যে রাশিয়ার দাবি, ভারতীয় পড়ুয়াদের মানবঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে ইউক্রেনের সেনা৷ জবরদস্তি খারকিভে আটকে রাখা হয়েছে তাঁদের৷ মস্কোর দাবি, রুশ বাহিনী ভারতীয় পড়ুয়াদের সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করার জন্য প্রস্তুত৷ অন্যদিকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে কিয়েভের দাবি, রাশিয়া লাগাতার বোমাবর্ষণ করে চলেছে৷ সেই কারনেই খারকিভ থেকে বেরতে পারছে না ভারত ও অন্যান্য দেশ থেকে আসা পড়ুয়ারা৷ 

এদিকে দিল্লির রুশ দূতাবাস থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে, ‘‘সাম্প্রতিক প্রাপ্য তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনের সেনা বাহিনী ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের পণবন্দি করেছে এবং তাঁদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যে কোনও উপায়ে তাঁদের রাশিয়া পৌঁছতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এর সম্পূর্ণ দায় কিয়েভের।’’ রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফেও দাবি করা হয়েছে, যে সকল ভারতীয় পড়ুয়া ইউক্রেন ছেড়ে রাশিয়ায় যেতে চাইছেন, তাঁদের যে কোনও উপায়ে খারকিভে আটকে রাখা হচ্ছে। তাঁরা রাশিয়ায় পৌঁছতে পারলেই নিরাপদ ভাবে বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। 

এ দিকে ভারতীয় পড়ুয়াদের নিরাপত্তার জন্য মস্কোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে নয়াদিল্লি৷ দিল্লির চাপে পড়েই ভারতীয় পড়ুয়াদের জন্য ‘সেফ প্যাসেজ’-এর ব্যবস্থা করছে রাশিয়া। গতকাল বেলা দেড়টা৷ দূতাবাস থেকে ভারতীয় পড়ুয়াদের মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে বলা হয়, যত দ্রুত সম্ভব খারকিভ ছাড়তে হবে৷ সন্ধ্যা ছ’টার মধ্যে পিসোচিন, বাবায় বা বেজলিউডিভকা-য় তাঁদের পৌঁছে যেতে হবে। কিন্তু খারকিভ থেকে পিসোচিন প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে। বাবায় প্রায় ১২ কিলোমিটার আর বেজ়লিউডিভকার দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার।

কী ভাবে এত দূরে পৌঁছবে তাঁরা? বাস, ট্রেনে মারত্মক ভিড়৷ অনেক সময় ভিড় ট্রেন থেকে মারধর করেও নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ পড়ুয়ারা যখন চিন্তায় তখন আসে দ্বিতীয় মেসেজ৷ যানবাহন না পেলে অন্তত হেঁটে যেন তাঁরা গন্তব্যে পৌঁছে যান৷ বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, খারকিভে চূড়ান্ত হামলা চালানোর আগে নয়াদিল্লির চাপে ভারতীয় পড়ুয়াদের জন্য এই ‘সেফ প্যাসেজ’-এর ব্যবস্থা করেছে রুশ বাহিনী৷ 

অন্যদিকে, ইউক্রেনের তরফে বলা হয়েছে, রাশিয়ার নির্মম গোলা বর্ষণ মিসাইল নিক্ষেপের কারণেই ভারত, পাকিস্তান, চিন-সহ অন্যান্য দেশের পড়ুয়ারা খারকিভ ছাড়তে পারছে না৷ আমরা ভারত, পাকিস্তান এবং চিনের সরকারের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, খারকিভ এবং সুমিতে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে আপনাদের যে পড়ুয়ারা আটকে পড়েছেন, তাঁদের ইউক্রেনের শহরে যাওয়ার পথ প্রশস্ত করার জন্য মস্কোর কাছে নিজেদের দাবি জানান।