ধীরে ধীরে তাইওয়ানকে ঘিরে ফেলছে চিন

চলতি বছরের শুরুর দিকে শুরু হয় রাসাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধের পাশাপাশি কি তবে এবার আরো এক যুদ্ধের সূত্রপাত হবে? তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে ক্রমেই তপ্ত চিন-আমেরিকার সম্পর্ক৷ দীর্ঘ আড়াই দশক ধরে ধিকধিক করে যে আগুন জ্বলছিল একধাক্কায় তা কার্যত স্ফুলিঙ্গে পরিণত হল।

আমেরিকার হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে উপমহাদেশের আকাশে ঘনাল অশান্তির মেঘ৷ ন্যান্সির বিমান তাইওয়ানের মাটি ছাড়তেই তাইওয়ানকে কার্যত ঘিরে ফেলল চিন৷

ক্ষেপণাস্ত্র, বায়ুসেনা, নৌবহর নিয়ে তাইওয়ানের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে পিএলএ। যে কোনও মুহূর্তে ড্রাগনবাহিনী হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা আন্তর্জাতিক মহলের৷ বুধবারই তাইওয়ান থেকে জাপানের উদ্দেশে রওনা দেন ন্যান্সি।

তাঁর সফর শেষ হতেই বৃহস্পতিবার তাইওয়ানের উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পশ্চিম জলসীমায় ব্যালিস্টিক মিসাইল উৎক্ষেপণ করে চিন৷ এমনটাই দাবি করা হয়েছে তাইওয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে।

একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা বেজে ৫৬ মিনিটে তাইওয়ানের উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পশ্চিম জলসীমায় চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি একাধিক দোংফেং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে।

পিএলএ-র গতিবিধির উপর নজর রাখছে তাইওয়ান সেনা৷ চিনের আগ্রাসী পদক্ষেপে আঞ্চলিক শান্তি এবং স্থিতিশীলতা লঙ্ঘিত হতে পারে বলেই দাবি তাইওয়ানের। তবে এখানেই থেমে থাকেনি চিন৷ তাইওয়ানের মূল ভূখণ্ডকে কার্যত ঘিরে ফেলে সামরিক মহড়া শুরু করেছে তারা।

কমপক্ষে ছ’টি জায়গায় চিনা বাহিনী তাদের সামরিক কার্যকলাপ চালাচ্ছে বলে সূত্রের খবর৷ তাইওয়ানের উত্তর, দক্ষিণ-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পূর্বের জলপ্রণালী এবং আকাশসীমায় যুদ্ধের প্রশিক্ষণ এবং অনুশীলন শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে চিনা সরকারি সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া।

ইস্টার্ন থিয়েটার কম্যান্টের অধীনে, নৌসেনা, বায়ুসেনা, রকেট বাহিনীর মহড়া চলছে। চিনের সামরিক কৌশল বাহিনী তাদের সহযোগিতা করে চলেছে৷

এদিকে, যৌথ সহযোগিতায় কী ভাবে তাইওয়ানকে ঘিরে ফেলা যায়, কী ভাবে জলসীমা এবং আকাশসীমা থেকে আঘাত হানা যায় প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করার যাবতীয় কৌশল নিচ্ছে চিন৷ ইতিমধ্যেই তার অনুশীলন চলছে বলেও জানা গিয়েছে।

এদিকে, চিনা বিমানবাহিনীর যুদ্ধ মহড়ার জেরে তাইওয়ানের আকাশপথে ঢুকতে পারছে না বিভিন্ন দেশের অসামরিক বিমান। এই পরিস্থিতিতে তাইপেইয়ের শোংশান বিমানবন্দর থেকে বিদেশি বিমানগুলি এক এক করে মুখ ঘুরিয়ে নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সেই আশঙ্কা সত্যি হলে আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হতে পারে তাইওয়ান সরকারকে। বুধবার ন্যান্সি পেলোসির বিমান তাইওয়ান ছেড়ে দক্ষিণ কোরিয়া পাড়ি দিতেই তাইওয়ানের আকাশে চিনা বিমানবহরের গতিবিধি আরও বেড়েছে। অন্যদিকে জবাব দিতে ‘তৎপরতা’ শুরু করেছেন তাইওয়ানের বায়ুসেনাও।