সাহিত্য

শেষ পর্ব

শেষ পর্ব

আমি তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছি।না পাওয়া গুলো, আমার পিছু ধাওয়া করে আসছে।আমাকে খাঁদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে ক্রমশ।আমি থমকে দাঁড়িয়ে আছি,একটা বিশাল বট গাছের তলায়।গাছের পাতা গুলো ঝড়ে পরে যাচ্ছে!আর কয়েকটা মাত্র পাতা,তারপর প্রখর রোদে জ্বলতে হবে আমায়।আর আমার স্বপ্নগুলো গুলোকেরোসিন মেখে তৈরি আছে, সুযোগ পেলেইচিতার কাঠ হয়ে আমাকে পোড়াবে বলে।
Read More
নয়াসাইলি : স্বপ্নদর্শী এক চা-ভূখণ্ড

নয়াসাইলি : স্বপ্নদর্শী এক চা-ভূখণ্ড

রেইন-ট্রি গাছদুটো আজও অতিকায় ছাতার মতো ছায়া বিছিয়ে রাখে বাগানে ঢোকার মুখে। অথবা চম্পাগুড়ি হাটের ঐ যে ঝুরিনামা বটগাছগুলো যারা আলো আঁধারি ঘেরা সন্ধ্যার বাতাসে  ফিসফিসিয়ে ভাসিয়ে দেয় বহুযুগ আগে হারিয়ে যাওয়া বিবর্ণ দিনগুলোর গল্প আর সেই গল্পের রেশ ভাসতে ভাসতে হারিয়ে যায় ছোট ছোট চা-জনপদগুলো ছুঁয়ে  পশ্চিমে জলঢাকার চর পেরিয়ে  দূর অরণ্যের ভেতর,  তারা এ মাটির ইতিহাস অনেকটাই জানে। কিন্ত উত্তরে প্রাচিরের মতো যুগযুগান্ত বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ঐ যে নীলরঙা আদিম পাহাড়, বয়সের যার কোনও মাপকাঠি নেই শুধু সে-ই জানে এ তল্লাট জুড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রতিটি চা-বাগানের জন্ম ইতিহাস। ১৬.১০.১৮৮৫ তারিখে মিঃ ডি. ক্লার্ক সাহেব যেদিন নিদিম টি- কোম্পানির …
Read More
বিয়েবাড়ি 

বিয়েবাড়ি 

পড়ন্ত বিকেলে, সূর্য প্রায় নদীর বক্ষে ঢলে পড়েছে, আকাশ হলদে-লাল ছটায় ভরে গিয়েছে যেন কোনো এক পাড়াগাঁয়ের মেয়ের সবে মাত্র বিবাহ সম্পন্ন হয়ে  এই প্রথম কপাল থেকে নাকের ডগায় সিঁদুর গড়িয়ে পড়ল।  আর আকাশের সেই মেঘগুলো যেন কোনো এক  সদ্য স্নান সেরে আসা কিশোরীর ঘন কেশ।  সেদিন ছিলো শ্রাবণ মাসের কোনো এক মঙ্গলবার, গ্রামের এক খানিক উন্নত পাড়ায় ভালোই সম্পদবান কোনো এক বাড়ির সবচেয়ে প্রিয় পুত্রের বিয়ে, বেশ জাঁক জমকভাবে সমস্ত কাজ সম্পাদন করা হচ্ছিলো, রান্নার ঠাকুর ছিলো উড়িষ্যার থেকে ভাড়া করা, নানারকমের মিষ্টির, সরবতের সমাহার ছিলো সেইখানে।  কোনো আয়োজনে কোনোপ্রকার খামতি ছিলো না। অতো বড়ো বিয়েবাড়ি তার ওপর আবার…
Read More
ব্যর্থতার অভ্যাস

ব্যর্থতার অভ্যাস

আধার যত গভীর হয়ে আসে, মস্তিষ্কেহিজিবিজি কাটে সময়ের ভর্ৎসনাপাংশু মুখে কেপে কেপে ওঠেঅসুখ বুকের গোঙানি। রাতের তারাদের উজ্জ্বল হাসিকেকালো মেঘের বিষাক্ত হুমকি মুচড়ে ধরে।ছটফট করেও পথ খুঁজে পায় নাশীতল বৃষ্টির মোক্ষ দ্বার । বারবার লড়াই বাধে জটিল পরিস্থিতির সূচালো মানসিকতা ও স্ব অস্তিত্ব রক্ষার, অথচ, জয়ী হয় রোজকার আত্মহনন। আর, শুষ্ক চোখ থেকে উদ্বাস্তুর মতো উবে যায়চিরকালের স্বপ্নের চাবিকাঠি।
Read More
এক বোবা মেয়ের মুখে কথা ফোটানোর গল্পটা

এক বোবা মেয়ের মুখে কথা ফোটানোর গল্পটা

শিশু দিবসে সব চেয়ে উজ্জ্বল জ্যোতিষ্করা হোলো বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন সকল শিশু l তাদের জন্যে আমাদের সুস্থ হৃদয়ে যেন স্নেহ, মায়া, মমতা, আদর,ভালোবাসা থাকে নিরন্তর l আমরা বলি কথার কথাকথার দাম আসলে কি?নীরব শব্দ যাদের মুখে'কথা'-তাদের বড্ড দামী ll এই সত্যি লেখনী এক নিঃশব্দ সন্তানের মুখে অবিরাম কথা দিয়ে শব্দ বুনে চলা এক মায়ের নিরন্তর চেষ্টার কথা llযে মেয়েটি অল্প কিছু শুনতে পারলেও বলতে পারতো না একেবারেই l সারাক্ষণ মায়ের হরেক-রকম বকম-বকম তাকে কতোই না শব্দ চিনিয়েছে , কথা শুনিয়েছে l আজ মেয়েটি অনেক কথা বোঝে, মায়ের অপ্রকাশিত বেদনা,কান্নার অনুভূতি গুলোও মেয়েটির শিশু মনে শব্দ হয়ে বাজে l তাই তো…
Read More
দৃশ্য

দৃশ্য

যাকে একমুহুর্ত দেখলেমনটা খুশিতে অনর্গল হয়ে যায়,সে আমার হোক বা অন্য কারোরতাতে কি আসে যায়? যার প্রতিটা নিঃশ্বাসের আওয়াজতীরের ফলার মতো বুকে বেঁধে যায়,সে কাছে থাকুক বা দূরেতাতে কি আসে যায়? যাকে স্পর্শ ছাড়াই অনুভব করা যায়,যার প্রতিটা পদক্ষেপ আমাতেই অন্ত হয়,সে কাছে থাকুক বা দূরেতাতে কি আসে যায় ? যার আশাটা ছিল আচমকাই,না হয় চলে যাওয়াটাও হবে আক্ষেপের,তাই সে মনে রাখুক বা ভুলে যাক,তাতেই বা কি আসে যায়? ...................নিরূপমা
Read More
অপ্রতিরোধ্য সত্যকাম

অপ্রতিরোধ্য সত্যকাম

রোহিণী বুঝতে পারছে তার দিন শেষ হয়ে আসছে । একটাই চিন্তা ছেলেটার সঙ্গে দেখা হবে তো ? ছেলেটা এখন দিল্লীতে । কিসের যেন মিটিং আছে । তখন সকলে বলেছিল রোহিণী ছেলেকে লেখাপড়া শেখাবার জন্যে যে নিজের শরীর পাত করছিস এই ছেলে পরে তোকে দেখবে ? একদিন দুপুরে রোহিণীর ঘুম ভেঙে পাশে ছেলেটাকে না দেখে ভাবে ছেলেটা এখন গেল কোথায় ? এই পরিবেশ ভাল না বলে যতটা সম্ভব ছেলেকে আগলে রাখার চেষ্টা করে । তাদের কাজ মানুষকে খুশী করা আর খুশী করতে না পারলেএকটা রাত নষ্ট হয়ে যায় । রোহিণীর এই কাজটা করতে আর ভালো লাগে না কিন্তু না করেও যে…
Read More
রথযাত্রার উৎস সন্ধানে

রথযাত্রার উৎস সন্ধানে

হিন্দুদের বিভিন্ন পূজা পার্বণের মধ্যে রথযাত্রার উৎসব একটি প্রসিদ্ধ উৎসব। আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে এই রথযাত্রার অনুষ্ঠিত হয়। শুক্লা একাদশীর দিন পুনর্যাত্রা বা উল্টো রথ হয়। হিন্দুরা রথযাত্রার দিন পুণ্যার্জনের জন্য রথের দড়ি টেনে থাকেন। তাদের বিশ্বাস রথের দিন শ্রী শ্রী জগন্নাথ বা শ্রীকৃষ্ণকে দর্শন করলে আর পুনর্জন্ম হয় না। বাংলা তথা ভারতের সর্বত্রই রথযাত্রার উৎসব উদযাপিত হয়। এর মধ্যে হুগলী জেলার মাহেশের রথযাত্রা, মায়া পুরের ইস্কনের রথযাত্রা, ওড়িশার পুরীর শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উল্লেখযোগ্য। রথযাত্রার উৎসবের প্রথম দিকে কিন্তু জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা বা শ্রী কৃষ্ণের রথযাত্রা বলা হতো না। বলা হত মৎস্যেন্দ্রনাথের রথযাত্রা। তবে কে এই মৎস্যেন্দ্রনাথ!অনেক…
Read More
সেই মহালয়া আজও…

সেই মহালয়া আজও…

বুড়ির পাট থেকে ফিরতি পথ ধরতেই দুদ্দাড় ছুটে বেরিয়ে গেল মা সন্তোষী নামের বাসটি। ভাগ্যিস লাফিয়ে রাস্তার ধারে চলে গিয়েছিলাম! না হলে বোধহয় বিপদ একটা হতই। উঠেছি সেই ভোরবেলায়। উঠোনে থাকা শিউলি গাছের তলা তখন সাদা ফুলে ঢাকা। ঝেঁপে ফুল এসেছে এবার। শিউলির মো মো গন্ধে আর ভোরের হালকা ঠান্ডায় কেমন একটা নেশা লাগছিল। হাতে তখনও গত রাতের মাংসের সুবাস। বৈষ্ণব বাড়ি বলে মাংস রান্নার ব্যাপার কম আমাদের। যেদিন হত সেদিন বেশ সাজো সাজো রব পড়ে যেত। রান্নাঘর থেকে অনেকটা দূরে আমাদের শোওয়ার ঘরের বারান্দায় মা আর বড়কাকিমা মাংস রাঁধতেন। ঘরে বসে প্রেসার কুকারের সিটি গুণতাম। একসঙ্গে সবাই খেতে বসা…
Read More
শেষ দেখা

শেষ দেখা

আমার বিদেহী আত্মায় শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তুমি হাতে রজনীগন্ধার স্টিক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছো আমার মৃতদেহের পাশে।তোমার চোখের কোণে চিক চিক করে উঠছে জল,ঠোঁট কেঁপে উঠছে ঘন ঘন।কিছু কি বাকি থেকে গেছে এখনো? আমিতো গোটা বিশ্ব চাইনি তোমার কাছে,শুধু তোমার অন্ধকারটুকু…তুমি তবু ফিরিয়েই দিলে। দেখো আজ কেমন আলো মেখে শুয়ে আছি,কাছে এসো,নিংড়ে নাওএযাবৎ যত আলো জমা করেছি,শেষদেখা হলে সবই তোমায় দিয়ে যাবো বলে। ....................পারমিতা দে(দাস)
Read More
হানিফ মাঝি ও বর্ষা

হানিফ মাঝি ও বর্ষা

প্রহর প্রহর ঝমর ঝমাৎঈশান কালো মেঘ।এমন সময় কলম ধরেইকবির আসে বেগ।আকাশ পানে হানিফ চাচাকরুণ চোখে চায়।মুষল ধারায় কেমন করেনৌকোখানা বায়!?কপাল জুড়ে ভাঁজের রেখাবিন্দু বিন্দু ঘাম -----বানের জলে ভেসেই চলেগাঁয়ের পরে গ্রাম।বুকের শিরা ফুলিয়ে হানিফহ্যাঁচকা মারে টান -----একটা শুধু টিনের চালাতাও বুঝি নেয় বান!!কবির কলম লিখেই চলেইলিশ মাছের ঘ্রাণ।ভাতের সুবাস পায় না হানিফক্যামনে বাঁচে প্রাণ!?
Read More
বাংলা উপন্যাস সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ

বাংলা উপন্যাস সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ

ইংরেজি সাহিত্যের প্রভাবে ভারতীয় অন্যান্য ভাষার সাহিত্যে যে নতুন ঘরানার সাহিত্য মূলত বিকাশ লাভ করেছিল তার মধ্যে উপন্যাসে ছিল প্রধানতম।বাংলা সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের(১৮৩৮-৯৪) পর সম্পূর্ণ এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল।ঐতিহাসিক উপন্যাসের আঙ্গিক থেকে বেরিয়ে বাংলা উপন্যাসের নতুন কায়াকে যিনি গঠন করেছিলেন তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর(১৮৬১-১৯৪১)। সামাজিক উপন্যাসের সূক্ষ্মতর ও ব্যাপকতর ব্যবস্থার প্রবর্তন করে রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্য ও সমাজকে বা উপন্যাসের ইতিহাসকে পুনর্নির্মাণ করেছিলেন।বাংলা উপন্যাসের বাস্তবতার যে গভীরতর পরিণতি দেখা গিয়েছিল তার প্রথম সূচক ছিলেন রবীন্দ্রনাথ।"রোমান্স ও ইতিহাস" এই দুটি বিষয়কে দূরে সরিয়ে বাস্তব জীবনের শক্ত জমির উপরে রবীন্দ্রনাথ নিজ স্বাতন্ত্র্যকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।উল্লেখ্য যে রবীন্দ্রনাথের পূর্বসূরী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সাহিত্য জীবনের শেষদিকে মানবচরিত্রের…
Read More
সেই সাধের ছাদটা

সেই সাধের ছাদটা

তুহিনের সাথে আমার যখন বিয়ে ঠিক করেন আমার বাবা, তখনই আমার এ বিয়েতে আপত্তি ছিল | কারণ, তুহিন আর আমি স্বভাবে, চরিত্রে, মানসিকতায় সম্পূর্ণ বিপরীত | তুহিনের বেশ বড়ো প্রমোটিংয়ের ব্যবসা, এলাকায় যথেষ্ট প্রতিপত্তি, সাথে অনেক অর্থ | আমার বাবার একসময়ের বন্ধু ছিলেন তুহিনের বাবা | কিন্তু বেশ অনেকদিন হয়েছে তিনি গত হয়েছেন | কিন্তু তুহিনের পরিবারের সাথে আমার বাবার বেশ সুসম্পর্ক ছিল | সেই সুসম্পর্কের সূত্র ধরেই আমার বাবা তুহিনের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেন | আমি তখন সদ্য স্কুলে চাকরি পেয়েছি | চাকরির সাথে বিভিন্ন নৃত্যনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করি | আমার জীবনের একটা বড়ো অংশ ছিল নাচ | আমার…
Read More
মূক

মূক

শত তল্লাশ শেষে নিজেকে আবিষ্কার করেছিএক অন্ধকার ঘেরা চাপা গলিতেবারবার পা টেনে রয়েছে বিষাক্ত কর্দমাক্ত পথ। দুচোখের পাতায় অনায়াসে ঝড়ে পড়াস্রোত যেন, কিছু বলতে চেয়েছিলঅথচ, আজও স্তব্ধ। কেবল ভেসে আসে দহন আর্তনাদযার কালো ধোঁয়ায় ঝাপসা চারিদিক ,বোধহয় বুকের ভেতর থেকেজ্বলে উঠছে সেই অবদমিত চিৎকারজটিল সম্পর্ক ঘেরা বেড়াজালেধর্ষিত মনটার।
Read More