এবার কি তবে বই থেকেও মুছে যাবে পার্থর নাম

রাজ্যে তোলপাড় পরিস্থিতি। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় জর্জরিত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ এই পরিস্থিতিতে সমস্ত রাজনৈতিক পদ হারানোর পরে এবার প্রশ্ন উঠছে বইয়ের পাতায় তার নাম নিয়ে৷ এবার কি তবে মুছে যাবে এই অস্তিত্ব টুকুও? মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ইতিহাস বইতে লেখা রয়েছে সিঙ্গুর আন্দোলনের কথা। সেখানে উল্লেখ রয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম।

কিন্তু, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পরেই অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে তাঁর নাম রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এ প্রসঙ্গে শিক্ষা দফতরের অধীনস্থ সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার জানান, এই বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই৷ এটা নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়।

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নেবেন বা যে নির্দেশ দেবেন সেটাই করা হবে৷ বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পাশে বসেই তিনি বলেন, ‘‘অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস বইতে যে বাক্য রয়েছে তাতে কোনও ভুল নেই। ২০১৬ সালে যখন এটা লেখা হয়েছিল, সেই প্রেক্ষিতে সেটা সত্য ছিল।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অষ্টম শ্রেণির পাঠ্য ‘অতীত ও ঐতিহ্য’ বইতে সিঙ্গুর আন্দোলন পর্বের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানেই লেখা রয়েছে, ‘সেই আন্দোলনকে সুসংহত করে তার নেতৃত্ব দিলেন শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলনেতা পার্থ চ্যাটার্জী।’

কিন্তু, পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগে ইডি-র হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরেই পার্থর সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে শুরু করেছে তৃণমূলের। মন্ত্রিত্বর সঙ্গে সঙ্গে দলের সমস্ত পদ থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে টাকার পাহাড় উদ্ধারের পরে জনমানসে পার্থকে নিয়ে ভিন্ন ধারণা তৈরি হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে স্কুলের পাঠ্য পুস্তকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম রাখা উচিত নয় বলেই বিভিন্ন মহলে দাবি উঠতে শুরু করেছে। অতীতেই বা কেন এই অধ্যায় পাঠ্যের অংশ করা হয়েছিল তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজনীতিক থেকে শিক্ষাবিদরা।

এদিকে অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যে নাম রেখে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে নেলসন ম্যান্ডেলার স্ত্রীর কথা উল্লেখ করেন অভীক। তাঁর দাবি, স্ত্রী উইনি ম্যান্ডেলার কিছু দুর্নীতির কথা জানার পরেই প্রথমে বিবাহবিচ্ছেদ করেন নেলশন। এর পর স্ত্রীকে দল থেকে বহিষ্কার করেন তিনি। কিন্তু, বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলনে উইনি যে ভূমিকা পালক করেছিলেন তার উল্লেখ এখনও দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়েবসাইটে গেলে দেখা যায়।

প্রসঙ্গত, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ-বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী, রাজনৈতিক নেতা এবং প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি হলেন নেলশন ম্যান্ডেলা৷ আর পার্থ চট্টোপাধ্যায় হলেন তৃণমূল নেতা৷ দলের জন্মলগ্ন থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন তিনি৷