কলকাতা পুরসভার বেআইনি নির্মাণের ভূরি ভূরি অভিযোগ জমা পড়লেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, এই তথ্য সে কথাই প্রমাণ করছে। বুধবার ১০৫ নম্বর ওয়ার্ডে গরফার ঘোষপাড়ায় একটি চারতলা বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গেলে স্থানীয় মহিলাদের বাধার মুখে পড়েন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা। টানা কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরে কিছুটা অংশ ভেঙে ফিরে যেতে হয় পুরকর্মীদের। এ নিয়ে শুধু ওই ঠিকানাতেই পাঁচ বার বেআইনি বাড়িটি ভাঙতে গেলেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা। আগের চার বারও হেনস্থার মুখে বাড়ি না ভেঙেই ফিরে আসতে হয়েছিল তাঁদের। পুর ইঞ্জিনিয়ারেরা জানাচ্ছেন, চারতলা ওই বেআইনি বাড়িটি ভাঙার জন্য আর তিন বার যাবেন তাঁরা। নীচের তিনটি তলই লোকজনের দখলে আছে। তাই পুরো বাড়ি আদৌ ভাঙা যাবে কিনা, তা নিয়ে ঘোর সংশয়ে তাঁরা।
এ শহরে বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গেলে কখনও খোদ এলাকার পুরপ্রতিনিধি বাধা হয়ে দাঁড়ান, কখনও বা স্থানীয় মহিলারা এক জোট হয়ে হেনস্থা করেন পুর ইঞ্জিনিয়ারদের। পর্যাপ্ত মহিলা পুলিশকর্মী সঙ্গে না থাকায় পিছু হটতে বাধ্য হন পুর ইঞ্জিনিয়ারেরা। বিল্ডিং বিভাগ সূত্রের খবর, ১৫ নম্বর বরোর পাশাপাশি ৩, ৭ ও ১২ নম্বর বরোতেও প্রচুর বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে। সেই তুলনায় বাড়ি ভাঙা হচ্ছে সামান্যই।
গত কয়েক মাসে বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের। মাসকয়েক আগে চারু মার্কেট থানা এলাকায় বেআইনি বাড়ি ভাঙতে যাওয়ায় ওই বিভাগের এক মহিলা ইঞ্জিনিয়ারকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় লোকজন। এমনকি, অভিযোগ, বন্দুক নিয়ে এসে ভয় দেখানো হয় তাঁকে। তার পরে পুলিশ এসে কোনও মতে ওই মহিলা ইঞ্জিনিয়ারকে উদ্ধার করে। আবার মাস দুয়েক আগে বেহালায় বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গেলে পুরকর্মীদের বাড়ির মধ্যে আটকে রেখে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সেখানেও পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে আনে। মাস তিনেক আগে এন্টালির একটি আবাসনে বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গেলে স্থানীয় মহিলারা গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বাধ্য হয়ে নির্মাণ না ভেঙেই ফিরে আসতে হয় পুরকর্মীদের।