সাধারণ মানুষের লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে হয়েছে নয় ছয়। আজ থেকে প্রায় সাত আট বছর আগে রাজ্যে একের পর এক বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার রমরমা দেখা গিয়েছিল। সারদা, আইকর, টাওয়ার এবং পৈলানের মতো চিটফান্ড কোম্পানি গুলিতে লক্ষ লক্ষ মানুষ টাকা রেখেছিলেন।
পরে ভুক্তভোগী হয়েছিলেন আমানতকারীরা। এবার তাঁদের একটা বড় অংশ হয়তো স্বস্তি পেলেন। কারণ ৮৫ হাজার আমানতকারীদের হাতে উঠল চেক এবং তা তুলে দিল প্রাক্তন বিচারপতির একক কমিটি।
৮৫ হাজার আমানতকারীদের হাতে চেক তুলে দিয়েছে প্রাক্তন বিচারপতি শৈলেন্দ্র প্রসাদ তালুকদারের একক কমিটি। বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা পৈলান গ্রপের যাঁরা আমানতকারী তাদের মধ্যে ৮৫ হাজার মানুষের হাতে চেক তুলে দেওয়া চলছে।
১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই টাকা দেওয়া হবে বলে জানান হয়েছে। এদের পাশাপাশি আর এক লক্ষ মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হবে টাকা।
আমানতকারীদের পক্ষের আইনজীবী অরিন্দম দাস বার বার আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন কী ভাবে গরিব খেটে খাওয়া মানুষের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া যায়। প্রাক্তন বিচারপতি এস পি তালুকদারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে আমানতকারীদের টাকা ফেরাতে উদ্যোগী হন তিনি।
২০১৪ সালে সারদা কাণ্ডের পর একের পর এক বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার না প্রকাশ্যে আসতেই সারা রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ প্রতিবাদ আন্দোলন শুধু নয়, বহু মানুষ আত্নহত্যা করেছিলেন। বহু এজেন্টদের রাতারাতি ঘরছাড়াও হতে হয়েছিল।
কলকাতা হাইকোর্টে প্রথম সারদা কোম্পানি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা হয় এবং তার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত শুরু করে। মামলা ফিরে আসে কলকাতা হাইকোর্টে।
তৎকালীন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর নির্দেশে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গঠিত হয় বিশেষ বেঞ্চ।
কী ভাবে ফেরত পাওয়া যাবে আমানতকারীদের কোটি কোটি টাকা? ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করে প্রাক্তন বিচারপতি এস পি তালুকদারের একক কমিটি সক্রিয় হল।
বিভিন্ন বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার কোথায় কোথায় কত স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে তার একটি তালিকা তৈরি করে কী ভাবে সম্পত্তি আমানতকারীদের ফিরিয়ে দেওয়া যায় শুরু হয় তার তোড়জোড়। আপাতত টাকা ফেরতের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া গিয়েছে।