শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় তৎপরতা বাড়ালো সিবিআই, উঠে এলো এক চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ রাজ্যে জুড়ে তোলপাড় পরিস্থিতি। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বেনজির তল্লাশি চালিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি ফ্ল্যাট থেকে ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)৷
অফিসাররা যখন অর্পিতার ফ্ল্যাটে হানা দেন, তখন তাঁরা লক্ষ্য করেছিলেন দুটি ভাগে টাকা রাখা ছিল৷ আর সেখান থেকেই সন্দেহের সূত্রপাত৷ এরপর দফায় দফায় তা নিয়ে চলে জিজ্ঞাসাবাদ৷ ইডির আধিকারিকদের প্রশ্নের মুখে পড়ে অর্পিতার ঝোলা থেকে কার্যত বেরিয়ে আসে বেড়াল৷
সূত্রের খবর, ফ্ল্যাটে টাকা রাখার বিনিময়ে প্রাক্তন মন্ত্রীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন অর্পিতা। সেই কমিশনের টাকাই সরানো থাকত একপাশে৷ অন্যপাশে থাকত মূল টাকা৷ শুধু কমিশন নেওয়াই নয়, কমিশন বৃদ্ধির জন্য রীতিমতো দরকষাকষিও করতেন অর্পিতা।
অভিযোগ, কমিশন নিয়ে পার্থকে রীতিমতো ব্ল্যাক মেলিংও করতেন তিনি৷ কমিশন বড়ানো না হলে সব কীর্তি ফাঁস করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিতেন অভিনেত্রী। কিন্তু, সেই সময় শাসকদলের দোর্দন্ডপ্রতাপ মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এহেন একজনকে কীভাবে চাপে রাখতেন অর্পিতা?
সূত্রের খবর, কমিশন নিয়ে একবার ঝামেলা হয়েছিল তাঁদের৷ ২০১২ সাল হবে৷ পার্থকে চাপে রাখতে একেবারে নগদ ১০ কোটি টাকা নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন অর্পিতা৷ তার উপর মোবাইল ছিল সুইচড অফ৷ এরপরেই চাপে পড়ে যান প্রাক্তন মন্ত্রীমশাই। খোঁজ শুরু হয় অর্পিতার৷ শেষ পর্যন্ত মুম্বইতে গিয়ে খোঁজ মেলে তাঁর। সেই বারের মতো স্বস্তি পান পার্থ৷
সেবার কোনও ক্রমে অর্পিতার হদিশ মিললেও, ফের নতুন করে চাপ দিতে শুরু করেন তিনি। একটি বাংলা দৈনিকে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১২ সাল পর্যন্ত লাখ প্রতি ১৫-২০ হাজার কমিশন নিতেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।
কিন্তু, এর পর থেকেই কমিশন বৃদ্ধির জন্য পার্থের উপর চাপ বাড়াতে শুরু করেছিলেন তিনি। একবার তো ৩০ কোটি টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছিলেন বলেও শোনা যাচ্ছে। এসব দেখার পর আর কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চাননি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে একেবারে ৩০ শতাংশ কমিশন দিতে রাজি হয়ে যান বলেই সূত্রের খবর।