সুধাকণ্ঠ-শচীনকর্তার প্রতিধ্বনিতে মিলল অসম-ত্রিপুরা

Estimated read time 1 min read

অসম ও ত্রিপুরা-উত্তর পূর্বের এই দুই রাজ্যের মধ্যে। ও সম্প্রীতির মজবুত বছন কিংবদন্তি কতশিল্পীষয় শচীন দেব বর্মন ও ড. ভূপেন হাজারিকা। শচীন দেব বর্মনের জন্মভূমি ত্রিপুরায় দু’দিন আগে উদযাপন করা হয় অসম-গৌরব সুধাকণ্ঠ ড. ভূপেন হাজরিকার জন্মজয়ন্তী। এদিকে, শচীন দেব বর্মাননা স্মৃতিতে আগামী অক্টো মাসে ওয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ স্মরণানুষ্ঠান। প্রকৃতপক্ষে রাজ্য দুটির মধুর সম্পর্ক বার্তা নিয়েই ব্যতিক্রম মাসডোর ৩০ জনের একটি প্রতিনিধি দল গিয়েছিল ত্রিপুরার আগরতলায়। ব্যতিক্রম মাসডোর সঙ্গে এই ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের পরিক্রমা বিভাগ এবং নিউজ সহযোগিতা করেছে ত্রিপুরা বেংগল ৩৬৫। এই অনুষ্ঠানে শুধু সরকারের তথ্য ও সাংস্কৃতিক মত বা ভাষার বিনিময় নয়, দুটি সংস্কৃতির মধ্যে সমন্বয় সেতু গড়ে তোলাই ছিল ব্যতিক্রম-এর প্রধান উদ্দেশ্য।

গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলই বৈচিত্রময় লোকসংস্কৃতির রত্নভাণ্ডার। তাকে নিজেদের সৃষ্টিসুখে এভর করে বাইরের জগতে ২১ তুলে ধরেছেন ড. ত ন ড. ভূপেন হাজরিকা ও শচীন দেববর্মন। তাঁদের সুরসৃষ্টিতে ভর করে অসম ও ত্রিপুরার মধ্যে সম্পর্কের বুননকে আরও মজবুত করতে চাইছে অসমের সামাজিক সংস্থা ‘ব্যাতিক্রম মাসডো’। উত্তর-পূর্ব ভারতে তাঁরাই ছিলেন সঙ্গীত জগতের আসল অ্যাম্বাসাডর। ত্রিপুরার গৌরব এস ডি বর্মণ এবং অসমের ভূমিপুত্র ডঃ ভূপেন হাজারিকার গান সম্পর্কে আয়োজকরা বলতে চাইছেন, ‘এই গান হোক বহু আস্থাহীনতার বিপরীতে এক গভীর আস্থার গান’। শচীনকর্তার ‘টাকডুম টাকডুম বাজাই বাংলাদেশের সেল’ -এর সুরেই তাঁরা বলতে চাইছেন, ‘শোন গো দখিন হাওয়া’। অথবা ‘কে যাস রে ভাটি গাঙ বাইয়া। ড. ভূপেন হাজরিকার We are in the same boat brother- এর বাস্তব চিত্র সেই সন্ধ্যায় ফুটে ওঠে আগরতলার উউিন হলে। অনুষ্ঠান শুভারস্ত হয় ভুপেন হাজারিকার ‘মানুষে মানুহর বাবে বিস্ফীত গানের মাধ্যমে। তার পর প্রদীপ প্রজ্জ্বলন এবং সুবাকর্ডের প্রতিচ্ছবিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ত্রিপুরার প্রখ্যাত ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার, আই এ এস প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, লেখক শব্দ/শুভ্র দেববর্মন, সাংবাদিক সম্পাদক প্রণব সরকার, অ্যাডভোকেট রত্নেশ কুমার রায়, টেকনো বিশ্ববিদ্যালয়র ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর রতন কুমার সাহা, জহর ব্যানার্জি, রবীন্দ্র করালী, বরাক উপতাকার ভাষ্ময় দাস, কলকাতার লেখক অশোক চক্রবর্তী, সাংবাদিক তরুণ চক্রবর্তী, সমাজ সেবক জয়দীপ সান্যাল প্রমুখ।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর সুন্নাকন্ঠের ভাই সমর হাজরিকা তুলে বরেন ভুপেন হাজরিকার সঙ্গে ত্রিপুরার সুসম্পর্কে কথা। এই নস্টালজিক পরিবেশে অনুষ্ঠানে ভূপেনদার উপস্থিতি অনুভব করা গিয়েছিল। প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী তিথি দেববর্মনের হাতে তুলে দেওয়া হয় ‘ড. ভূপেন হাজরিকা ব্যতিক্রম আন্তর্জাতিক সম্মান ২০২৪’। শিল্পী দেববর্মন পুরস্কার গ্রহণ করে আবেগিক হয়ে পড়েন । তিনি ভুপেন। হাজরিকার সঙ্গে কাটানো সময়ের কথা উল্লোগ কথা উল্লেখ করেন। সেইসঙ্গে ব্যতিক্রম সংস্থাকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বলেন, এমন একটি সম্মানের জন্য তিনি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। সংগীত শিল্পী তিথি দেববর্মন উদাত্ত কণ্ঠে “বিমূর্ত মোর নিশ্যতি যে মৌনতার সূতারে বোমা এখনি নীলা চাদর” -এর বাংলা সংস্করণ পরিবেশন করেন। পুরস্কার প্রদানের পর তানিশা দত্তের “বিস্তীর্ণ দুপারের অসংখ্য মানুষের হাহাকার” গানের ওপর নূক্স পরিবেশিত হয়। ও. মৌসুমি সহরিয়ার করে “মোর গান হওঁক বন্ধ আস্থাহীনতার বিপরীতে”, সুরাকণ্ঠের লাতুস্পুত্র ডাহর হাজারিকা গাইলেন “বিস্তীর্ণ পাররে অসংখ্য জনরে”, সংস্কৃতা মালালার পরিবেশন করেন “মই বিচারিয়ো হেজার চকুত দীপ্ত সুর্যশিখা”, জয়তি ভাট্টাচার্য, প্রণিতা তালুকদার পরিবেশন করেন বেশ কয়েকটি কালজয়ী গান। নৃতা পরিবেশন করে মৈত্রী সংসদ, ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী বৃন্দ। অনুষ্ঠান আয়োজক ব্যাতিক্রম সভাপতি ড. সৌমেন ভারতীয়া বলেন, “সুধাকণ্ঠ ড. ভুপেন হাজরিকা এবং শচীন দেববর্মনকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে আমরা প্রতিবেশী রাজ্য দুটির মধ্যে সাংস্কৃতিক যোগাযোগ আরও অধিক সম্প্রাসারণ বদরতে চাইছি। ।। এই অনুষ্ঠানের পরিবেশ আমাদের একটি প্রচেষ্টামাত্র। এই অনুষ্ঠান ড. ভূপেন হাজারিকা ও শচীন দেববর্মনের প্রতি সম্মান জানানোর পাশাপাশি উভয় রাজ্যের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক আদান- প্রদ্যানর প্রতীক হিসাবে পরিগণিত হবে।” অনুষ্ঠানে নিউজ বেংগল ৩৬৫ এর স্বত্ত্বাধিকার জয়দীপ সান্যাল বলেন, ‘ড. ভূপেন হাজরিকা প্রকৃতপক্ষে অসম তথা উত্তর-পূর্বাঞ্চলেরই নন, তিনি গোটা আরতের, বিশ্বের। তিনিই হিসেন প্রকৃত যাযাবর শিল্পী। তিটা নিপীড়িত, নির্যাতিত, শোষিত, বঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করেছেন আজীবন। এই মহান শিল্পীর স্মরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে আমি নিজকে বন্য অনুভব করছি।’

You May Also Like

More From Author