শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় জর্জরিত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ জেল হেফাজতে রয়েছেন পার্থ৷ এই পরিস্থিতিতে জেলবন্দি বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে শাসকদল৷ মন্ত্রিসভা থেকে ছেঁটে ফেলার পর দলের সমস্ত পদ থেকেও বরখাস্ত করা হয়েছে তাঁকে৷
এমনকী তৃণমূল থেকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে প্রাক্তন মহাসচিবকে৷ এবার বেতনে কোপ পড়ল পার্থের৷ বিধানসভা সচিবালয় সূত্রে খবর, অন্যান্য বিধায়কদের তুলনায় ৬০ হাজার টাকা কম বেতন পাবেন তিনি৷
কিন্তু, কেন বেতন কমল তাঁর?
আসলে বেতনের পাশাপাশি বিধানসভার বিভিন্ন কমিটির বৈঠকে যোগ দিয়ে অতিরিক্ত ভাতা পেয়ে থাকেন বিধায়করা৷ বিধানসভায় মোট ৪১টি কমিটি রয়েছে। প্রত্যেক বিধায়ককে ন্যূনতম দুটি কমিটিতে রাখা হয়, যাতে তাঁরা মাসে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা বৈঠক-ভাতা নিশ্চিত করতে পারেন৷
কিন্তু, বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, পার্থকে কোনও কমিটিতেই রাখার নির্দেশ আসেনি। কারণ তিনি এখন জেলবন্দি। কবে মুক্তি পাবেন, তাও বলা সম্ভব নয়৷ ফলে কোনও ভাবেই কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন না তিনি৷
সেই কারণেই আপাতত কোনও কমিটিতে তাঁকে না রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর কমিটির সদস্য না থাকায় ৬০ হাজার টাকা ভাতাও আর পাবেন না পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
তাহলে ঠিক কত টাকা বেতন পাবেন বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক?
সচিবালয়ের সূত্রে খবর, বিধানসভা কমিটির বৈঠকের ভাতা ছাড়া বেতন বাবদ ২১,৮৭০ টাকা পেয়ে থাকেন বিধায়করা। বিভিন্ন কমিটির বৈঠকে যোগ তাঁদের মোট বেতন দাঁড়ায় ৮২ হাজার টাকায়৷ কিন্তু, পার্থ এখন জেলবন্দি৷ ফলে বিধানসভার কমিটি ও স্থায়ী সমিতির কোনও কমিটিতেই নেই তিনি।
ফলে ভাতা বাবদ ৬০ হাজার টাকাও যুক্ত হবে না তাঁর মূল বেতনের সঙ্গে৷ এমতাবস্থায় ২১,৮৭০ টাকা বেতন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। তৃণমূল পরিষদীয় দলের এক সদস্যের কথায়, “পার্থ এখন জেলে রয়েছেন৷ উনি কবে আবার বিধানসভায় এসে কাজে যোগ দিতে পারবেন, তার কোনও ঠিক নেই।
তাই তাঁকে কমিটিতে রাখারও কোনও মানে হয় না৷ এর চেয়ে যে সকল বিধায়ক নিয়মিত বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন, তাঁদেরকেই সুযোগ দেওয়া উচিত।” সূত্রের খবর, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে যাতে বিধানসভার কোনও কমিটিতে রাখা না হয়, তৃণমূল পরিষদীয় দলের তরফে বিধানসভার সচিবালয়কে সে কথা বলা হয়েছে।
অন্য দিকে বিধানসভার নিয়মে কোনও মন্ত্রী বিধানসভার এই কমিটিগুলির সদস্য থাকতে পারেন না। সেই নিয়মে মন্ত্রী হয়েই বিভিন্ন কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন পার্থ ভৌমিক, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, তাজমুল হোসেন, প্রদীপ মজুমদার, উদয়ন গুহ, সত্যজিৎ বর্মনরা৷
আবার মন্ত্রিত্ব খুঁইয়ে ফের কমিটির সদস্য হয়েছেন সৌমেন মহাপাত্র, রত্না দে নাগ, পরেশ অধিকারী ও হুমায়ুন কবীর৷ মন্ত্রিত্ব হারিয়ে পার্থও এখন সাধারণ বিধায়ক৷ কিন্তু কমিটির সদস্য না হওয়া বাকি বিধায়কদের মতো বৈঠক-ভাতা জুটবে না তাঁর৷