উচ্চ শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকার সঙ্গে রাজ্যের বিএড এবং এমএড কলেজগুলির নিয়ামক প্রতিষ্ঠান বাবাসাহেব আম্বেদকর এডুকেশন বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশিকা তথা ভর্তির পদ্ধতি মিলছে না বলে অভিযোগ। অভিযোগ, ভর্তির পোর্টাল তিন বারের বদলে দু’বার খুলেই বন্ধ রেখেছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর জেরে ২০২৪-’২৬ শিক্ষাবর্ষে উত্তরবঙ্গের বহু শিক্ষার্থী বিএড এবং এমএড পাঠক্রমে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না বলে দাবি। ফলে উত্তরবঙ্গের ১০১ টি বিএড কলেজে গড়ে ৫০ শতাংশ আসন এখনও খালি রয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। যদিও, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, উচ্চ শিক্ষা দফতরে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
গৌড় মালদহ কলেজ অফ এডুকেশনের সম্পাদক আশরাফুল হক জানান, তাঁদের কলেজে ১০০টি আসনের মধ্যে ৬০ টিই খালি রয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘উচ্চ শিক্ষা দফতর এবং বাবাসাহেব আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবেই এই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের এবং আমাদেরও। আমরা শীঘ্রই মামলায় যাচ্ছি।’’ বালুরঘাট বিএড কলেজের ২০০টির মধ্যে ১০২টি আসন খালি রয়ে গিয়েছে। কলেজের সভাপতি নব দাস বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে এ রকম পরিস্থিতি হয়নি। নির্দেশ মতো তিনবার পোর্টাল খুললেই আর সমস্যা হত না।’’
কেন আসন খালি রয়ে গেল? উচ্চ শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, গত বছর ৬ অগস্ট দফতর থেকে একটি নির্দেশিকা (নং ৫৩৬–ইডিএন(সি এস)/১০এম–২০১৫ বের হয়। তাতে বলা হয়, প্রাথমিক ভাবে ২০২৪ সালের অক্টোবরের মধ্যে বিএড এবং এমএড পাঠক্রমে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। কিন্তু আসন খালি থাকলে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ভর্তি নেওয়া হবে। নির্দেশিকায় বলা হয়, এজন্য তিন দফায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংক্রান্ত পোর্টাল খোলা রাখতে হবে। কিন্তু কলেজগুলির অভিযোগ, ওই সময়কালের মধ্যে দু’বার ভর্তির পোর্টাল খোলা হয়েছে। তাতেই বিপত্তি। কারণ, উত্তরবঙ্গের এক একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরের ফল আলাদা সময়ে বেরোয়। সেই মতো পোর্টাল খোলার প্রথম দু’টি পর্যায়ে প্রাথমিক ভাবে সরকারি এবং কিছু বেসরকারি কলেজে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু পোর্টাল না খোলায় পরে ভর্তি হতে চাওয়া বাকি শিক্ষার্থীরা আর সেই সুযোগ পাচ্ছেন না। তাতে অনেকের একটি বছর নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা।এই অভিযোগ মানছেন না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য সোমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কতবার পোর্টাল খুলতে বলা হয়েছে, তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভর্তির শেষ সময়সীমা বজায় রাখা। যদিও সমস্যার কথা উচ্চ শিক্ষা দফতরে জানানো হয়েছে। নতুন নির্দেশিকা না পেলে পোর্টাল খোলা সম্ভব নয়।’’ কোচবিহার বি এল এডুকেশনাল টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, শিলিগুড়ির সরকারি বিএড কলেজ কর্তৃপক্ষেরা অবশ্য জানান, তাঁদের আসন খালি থাকার সমস্যা নেই।