বিগত দু বছরের বেশি সময় করোনা সংক্রমনের প্রভাবে এবং লকডাউনের প্রভাবে চাপ পড়েছে রাজ্যের অর্থনীতির ওপর। তার উপর রয়েছে কেন্দ্রের ‘অসহযোগিতা’৷ তা সত্ত্বেও রাজ্যের মানুষের স্বার্থে বিভিন্ন প্রকল্পগুলিকে জিইয়ে রাখতে জনমুখী বাজেটের প্রস্তুতি শুরু করল নবান্ন৷ সামাজিক সুরক্ষা, গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন, নারী সশক্তিকরণ, মানুষের হাতে নগদ অর্থ তুলে দেওয়ার মতো প্রকল্পগুলির বরাদ্দ বাড়ানোর উদ্যোগ নিল অর্থদফতর।
এই মুহূর্তে রাজ্য সরকারের অন্যতম জনপ্রিয় প্রকল্প হল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার৷ এই প্রকল্পের জন্য মাসে রাজ্যের কোষাগার থেকে ব্যয় হয় সাত হাজার কোটি টাকা৷ ফলে এই প্রকল্প খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি অন্যান্য আর্থিক প্রকল্পগুলির ব্যয় বরাদ্দ বারানোর চিন্তাভাবনাও করা হচ্ছে৷ উল্লেখ্য, এখন অর্থ দফতর রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে৷ ফলে চূড়ান্ত খসড়া তৈরির পর ফাইনাল টাচআপ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে৷
চলতি মাসে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের খরচ হয়েছে ৮০০ কোটি টাকা। রাজ্যে দেড় কোটির বেশি মহিলা এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। পরবর্তী সময় দুয়ারে সরকার শিবিরের আয়োন করা হলে আরও বেশি সংখ্যক মহিলা এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করতে পারেন, এমনটা ধরে নিয়েই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের বাজেট বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে নবান্ন৷ এ ছাড়াও রাজ্য সরকারের যে সকল জনমুখী প্রকল্প রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে দুয়ারে রেশন, খাদ্যসাথী, কন্যাশ্রী, কৃষকবন্ধু প্রকল্পগুলির জন্য৷ এই ধরনের জনমুখী প্রকল্পগুলির জন্য সব মিলিয়ে বছরে ৮৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হয় রাজ্য সরকারের।
মানুষের হাতে অর্থ পৌঁছে দেওয়া ছাড়াও রাজ্য সরকারের খরচ হয় বিভিন্ন উন্নয়ন ও পরিকাঠামোমূলক প্রকল্পের জন্য৷ তার উপর করোনা মোকাবিলার জন্য গতবারের বাজেটের মতো এবারেও বাড়তি বরাদ্দ রাখতে হচ্ছে অর্থদফতরকে। মানুষের হাতে নগদের যোগান বজায় রাখার পাশাপাশি অর্থনীতিকে সচল রেখে আর্থসামাজিক পরিস্থিতির সার্বিক বিকাশই মূল লক্ষ্য নবান্নের।