নিউ টাউনে এ বার আবাসিক বাড়ি কিংবা ফ্ল্যাটে বাণিজ্যিক কাজকর্মে লাগাম টানা হতে পারে। কারণ, বহু আবাসন ও বাড়িতে অতিথিশালা বা অফিস চললেও সেই বাবদ কোনও কর প্রশাসনকে তারা দেয় না। কিন্তু এ ভাবে আর চলতে দিতে নারাজ ‘নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (এনকেডিএ)।দফতর সূত্রের খবর, আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক কাজকর্মের উপরে এ বার কর বা মূল্য নির্ধারণ করা হতে পারে। সেই মতো দ্রুত ওই সব বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলিকে নোটিস দেওয়া শুরু হবে। এনকেডিএ সূত্রের খবর, নিউ টাউনের বহু বিশিষ্ট নাগরিক, অবসরপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের অনেকেই নিজেদের আবাসস্থলে অতিথিশালা, অফিস বা আইন সংস্থা চালাচ্ছেন। সেখান থেকে তাঁরা রোজগার করলেও এনকেডিএ-র তহবিলে কিছুই যাচ্ছে না। তার উপরে সেই জায়গার চরিত্র বিনামূল্যে বদলের জন্য কোনও কোনও বিশিষ্ট বাসিন্দা প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এনকেডিএ-র আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, নিউ টাউনে ১২৪৩ টি অতিথিশালার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে মাত্র ৬০টি নিয়ম মেনে চলে। বাকিগুলি বেআইনি ভাবেই চলছেবলে দাবি এনকেডিএ কর্তৃপক্ষের। অভিযোগ, কোথাও ফ্ল্যাটবাড়ির একটি তলা জুড়ে অতিথিশালা, কোথাও আবার ফ্ল্যাটবাড়ির ভিতরেই চলছে অফিস। অথচ, বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড চলা সত্ত্বেও এনকেডিএ-কে কোনও কর দেওয়া হচ্ছে না। এ বার তাই ওই সব বাণিজ্যিক সংস্থাকে নিয়মঅনুযায়ী সংশ্লিষ্ট জায়গার চরিত্র বদল করতে বলা হবে বলে এনকেডিএ জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি নিউ টাউনের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ঘটনা সামনে এসেছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, জমির চরিত্র বদল না করেই সেখানেপ্রতিষ্ঠান তৈরি করে ফেলা হয়েছে। সূত্রের খবর, সেই জমির চরিত্র বদলের জন্য বিপুল অঙ্কেরটাকা হিডকোকে দিতে হবে ওই সংস্থার তরফে।
এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘নিয়ম মেনে কোনও কাজ হলে সমস্যা নেই। আবাসিক এলাকায় কোনও বাড়ি কিংবা ফ্ল্যাটবাড়ির চল্লিশ শতাংশ জুড়ে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড চলতে পারে। কিন্তু অনেকে পুরো জায়গাটাই বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করছেন। যাঁরা এ রকম করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিরাট অঙ্কের জরিমানা করা হবে।’’ এনকেডিএ জানাচ্ছে, যে কোনও আবাসিক জমির ৪০ শতাংশ অবধি ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহারকরা যেতে পারে। তার জন্য প্রতি বর্গফুট ৮০ টাকা হিসাবে মূল্য দিতে হবে। তবেই জায়গাটি বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের জন্য অনুমোদন পাবে। কিন্তু তা ছাড়াও বাকি ৬০ শতাংশ জায়গাতেও যাঁরা বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন, তাঁদের ওই ৬০ শতাংশের জন্য প্রতিবর্গফুট ১০০ টাকা হিসাবে জরিমানা করা হবে। এবং ওই জায়গা পরবর্তী কালে আর কোনও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা যাবে না। বাণিজ্যিক কাজ করতে হবে ৪০ শতাংশ জায়গার মধ্যেই। আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের জায়গার (৪০ শতাংশ) মূল্যায়ন এবংবাকি জায়গার (৬০ শতাংশ) জরিমানা নেওয়া হবে একটি প্লট কমপ্লিশন সার্টিফিকেট (সিসি) পাওয়ার পরে। যদিসিসি না থাকে, সে ক্ষেত্রে ওই জমিতে বিদ্যুতের সংযোগের সময় থেকে মূল্যায়ন ও জরিমানা আদায় করা হবে ।