বিগত দুই বছরের বেশি সময় ধরে গোটা বিশ্ব জুড়ে তান্ডব চালিয়েছে করোনাভাইরাস। বিশ্বজুড়ে এখনও রীতিমতো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে করোনা মহামারীর সংক্রামক ভাইরাস। এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে করোনাভাইরাসের আতঙ্ক। করোনার আতঙ্ক শুরু হওয়ার সাথে সাথে অর্থনৈতিক ভাবেও ভযেজে পড়ছে অনেক দেশ।
এই পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা দেশের আর্থিক বৃদ্ধির পাশাপাশি সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে চলেছেন। বিজেপি বিরোধীরাও এই ইস্যুতে লাগাতার নিশানা করে চলেছেন কেন্দ্রকে।
অনেকেই শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ বা পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করে আশঙ্কা করছেন যে এখনই বড় পদক্ষেপ না করলে আগামী দিনে ভারতের অবস্থাও ওই দেশগুলির মতো হতে পারে। কিন্তু সমস্ত অভিযোগ বা আশঙ্কা দূর করে ভারত প্রমাণ করে দিল বিশ্বের অর্থনীতিতে নয়াদিল্লি এখন প্রথম সারিতে রয়েছে।
অতিমারি করোনা পরিস্থিতিতে ভারত তথা বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশের অর্থনীতি প্রবল ধাক্কা খেয়েছে। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াবার রাস্তা খুঁজতে থাকে দেশগুলি। সেই জায়গায় অর্থনীতিতে বড় সাফল্যের মুখ দেখল ভারত। ব্রিটেনকে টপকে ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে উঠে এল। অন্যদিকে ব্রিটেন পাঁচ থেকে নেমে গেল ছয় নম্বর স্থানে।
ব্রিটেনে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার দৈনন্দিন খরচ বহু গুণে বেড়ে গিয়েছে। সেই জায়গা থেকে তারা যেভাবে এক ধাপ নীচে নেমে গেল সেটা ব্রিটেনের কাছে বড় ধাক্কা হিসেবেই চিহ্নিত হচ্ছে। সেখানে ভারত অর্থনীতিতে অভাবনীয় উন্নতি করেছে। বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট বলছে ২০২১ সালের শেষ তিন মাসেই ব্রিটেনকে পিছনে ফেলে দিয়েছে ভারত।
স্বাভাবিকভাবেই এই রিপোর্ট যথেষ্ট স্বস্তি দিল কেন্দ্রীয় সরকারকে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন চলতি আর্থিক বছরে ভারতীয় অর্থনীতির বৃদ্ধির হার সাত শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। আইএমএফ-এর রিপোর্ট অনুযায়ী গত মার্চ ত্রৈমাসিকে ভারতের অর্থনীতি ছিল ৮৫৪.৭ বিলিয়ন ডলারের। সেই সময় ব্রিটেনের অর্থনীতি ৮১৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়ে ছিল।
সেই সঙ্গে রিপোর্টে বলা হয়েছে আর্থিক মন্দা ও মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব প্রত্যেকটি দেশের উপরেই পড়েছে। তা সত্ত্বেও ভারতের অগ্রগতি সকলেরই নজর কেড়েছে। জানা গিয়েছে চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩.৫ শতাংশ। এছাড়া গত আর্থিক বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপি ৪.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।
বিশ্বব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক রিপোর্টও যথেষ্ট স্বস্তি দিয়েছে নয়াদিল্লিকে। তাতে বলা হয়েছে শীঘ্রই চিনকে টপকে বিশ্বের দ্রুততম আর্থিক বৃদ্ধির শিরোপা ভারত পেতে পারে। সবমিলিয়ে এটা স্পষ্ট অতিমারি করোনাকে পিছনে ফেলে ভারতে আর্থিক বৃদ্ধির হার যথেষ্ট গতি পেয়েছে।