বিদেশে যাওয়ার অনুমতি মিললো অভিষেকের

মামলা চলছে তার বিরুদ্ধে। তাই মামলা চলাকালীন তার রাজ্যের বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই। কিন্তু অন্যদিকে বিদেশে চোখের চিকিৎসা চলে তাঁর৷ সেই কারণে মাঝে মধ্যেই বিদেশে যেতে হয় তাঁকে৷ তাই অনুমতি চেয়ে হাই কোর্টে গিয়েছিলেন তিনি৷ এবার মিললো অনুমতি৷ চোখের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে বিদেশে যেতে পারবেন স্ত্রী রুজিরাও৷ অভিষেকের আবেদনে সাড়া দিয়ে জানাল হাই কোর্ট৷

অভিষেকের দুবাই যাত্রায় আপত্তি জানিয়েছিল ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)’। তাঁদের যুক্তি, বিদেশে গিয়ে বিনয় মিশ্রের সঙ্গে দেখা করতে পারেন অভিষেক৷ এর পরেই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। সেই মামলায় ইডি-র আপত্তি খারিজ করে অভিষেকের দুবাই যাত্রায় সম্মতি জানায় আদালত৷ আগামী ৩ থেকে ১০ জুন অভিষেককে সস্ত্রীক দুবাইয়ে চিকিৎসা করানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে বিদেশ যাওয়ার আগে অভিষেককে বিমানের টিকিট, হোটেলের নাম, ফোন নম্বর ও হাসপাতালের নাম ইডির কাছে জমা দিতে হবে।

মামলার শুনানি পর্বে ইডির আইনজীবী এম ভি রাজু বলেন, কয়লা পাচার-কাণ্ডে ফেরার বিনয় মিশ্র বর্তমানে দুবাইয়ে রয়েছেন। ইডির আশঙ্কা, অভিষেক দুবাইতে বিনয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন৷ তিনিও বিনয়ের মতো দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত অভিষেক একাধিকবার বিনয়ের সঙ্গে বিদেশ সফর করেছেন বলেও দাবি ইডি-র। পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন, ভারতে এত সেরা সেরা চক্ষু চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান থাকা সত্ত্বেও কেন দুবাইয়ে যেতে হচ্ছে অভিষেককে? তাছাড়া অভিষেক কোন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তাঁর কোন তথ্য ইডির কাছে নেই। ইডি-র আইনজীবীর দাবি, অভিষেক কোন চিকিৎসকের কাছে দেখাবেন, সে বিষয়েও স্পষ্ট করে জানাননি৷

অভিষেকের আইনজীবী সপ্তাংশু বসু পাল্টা বলেন, ‘‘আমি যে কোনও জায়গায় চিকিৎসা করাতে পারি৷ তাতে অসুবিধা কোথায়? দুবাইয়ের পরিবর্তে সিঙ্গাপুরেও যেতে পারি চিকিৎসার জন্য৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো আমরা তদন্তে সব রকম সাহায্য করছি।’’ দুই পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর বিচারপতি ইডির আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, কেন্দ্রীয় সরকার যদি নিশ্চিত থাকেন যে বিনয় মিশ্র দুবাইতেই আছেন, তাহলে তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন? জবাবে ইডির আইনজীবী বলেন, কেন্দ্র সেই চেষ্টা চালাচ্ছে৷

এর পরেই বিচারপতি বলেন, ‘‘অভিষেক দুবাই থেকে অন্যত্র পালিয়ে যাবেন, ইডির এই আশঙ্কা অমূলক। অভিষেক কোথায় তাঁর চিকিৎসা করাবেন সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। তিনি এক জন সাংসদ। দুবাইয়ের হাসপাতাল থেকে তাঁর সঙ্গে একজনকে আনার কথা বলা হয়েছে। মামলাকারী তাঁর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে যেতে চান।’’ এর পরেই বিচারপতি বিবেক চৌধুরী অভিষেককে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেন৷ সেইসঙ্গে এও বলেন, অভিষেক কয়লা পাচার কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত নন৷ তিনি সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন৷