ভারত চীনের দ্বন্ধের মাঝেই নতুন ঘোষণা৷ লাদাখ সীমান্তে ক্রমাগত পড়ছে ড্রাগনের উষ্ণ নিঃশ্বাস৷ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় শক্তি বাড়াচ্ছে লাল ফৌজ৷ চিনা সেনাকে মোক্ষম জবাব দিতে শক্তি বাড়াচ্ছে ভারতও৷
মঙ্গলবার ভারতীয় সেনার হাতে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এক গুচ্ছ অত্যাধুনিক অস্ত্র তুলে দেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং৷ লাদাখ সীমান্তে সেই অস্ত্রগুলি ব্যবহার করবে ভারতীয় বাহিনী৷ কী কী অস্ত্র তুলে দিলেন রাজনাথ?
যুদ্ধক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে এদিন বহু প্রতীক্ষিত ‘ফিউচার ইনফ্র্যান্ট্রি সোলজার অ্যাজ এ সিস্টেম’(এফ-ইনসাস) ভারতীয় সেনার হাতে তুলে দেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী৷ দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে ভারতীয় সেনার হাতে আগামী দিনের যুদ্ধাস্ত্রের পুরো সেট তুলে দেন তিনি।
যা যুদ্ধাস্ত্রের আধুনিকীরণের পথে নিশ্চত ভাবেই বড় পদক্ষেপ৷ মাথার হেলমেট থেকে হাতের রাইফেল, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মেলবন্ধনে গঠিত এফ-ইনসাস পদ্ধতি আগামী দিনে হয়ে উঠবে ভারতীয় সেনার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ৷
এফ-ইনসাসে কী কী রয়েছে? এতে রয়েছে ৩০০ মিটার পাল্লার একটি একে ২০৩ অ্যাসল্ট রাইফেল৷ যা তৈরি হয়েছে উত্তরপ্রদেশের অমেঠির একটি কারখানায়। রয়েছে একটি ব্যালিস্টিক হেলমেট, একটি ব্যালিস্টিক গগলস, বুলেটপ্রুফ ভেস্ট, কনুই রক্ষার জন্য বিশেষ প্যাড।
এই বিশেষ হেলমেট ও ভেস্ট ৯ এমএম বন্দুকের গুলি এবং একে ৪৭-এর গুলি থেকে সেনাকে রক্ষা করতে সক্ষম। এ ছাড়াও এফ-ইনসাসে যোগাযোগ স্থাপনের সুবিধাও থাকছে। যুদ্ধক্ষেত্রে কমান্ড পোস্টের পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থা মজবুত করতে থাকবে একটি হ্যান্ডস-ফ্রিও। পদাতিক সৈন্যদের জন্য তৈরি বিশেষ হেলমেটে লাগানো থাকবে নাইট ভিশন সুবিধাসম্পন্ন যন্ত্র।
২০০০ সালে সেনাবাহিনীকে অত্যাধুনিক করে তোলার এই চিন্তাভাবনা শুরু করে ‘ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন’ (ডিআরডিও)৷ এই লক্ষে ডিআরডিও-র গবেষকরা আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইজরায়েলে প্রচলিত এই ধরনের পদ্ধতি নিয়েও পরীক্ষানিরীক্ষা করেন।
ভারতীয় সেনার হাতে এফ-ইনসাস পদ্ধতি চলে আসায় তা সেনাকে আরও মজবুত ও শক্তিশালী করবে বলেই বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস৷
এদিন দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি যে অন্যান্য অত্যাধুনিক অস্ত্র ভারতীয় সেনার হাতে এসেছে তার মধ্যে রয়েছে আকাশপথে চালকবিহীন নজরদারির জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্র, নজরদারিতে ব্যবহারযোগ্য নৌকা, অ্যান্টি পারসোনেল মাইন নিপুন, ইনফ্যান্ট্রি প্রোটেকটেড মোবিলিটি ভেইকেল।
লাদাখের দুর্গম এলাকায় লক্ষ্যবস্তু টার্গেট করতে ট্যাঙ্ক চালানোর ক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য বিশেষ সরঞ্জামও এদিন সেনার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি প্যাংগং লেকের কাছে চিনা বাহিনীর অতিরিক্ত তৎপরতা রুখতেও কড়া অবস্থান নিয়েছে ভারত। আনা হয়েছে, নতুন নজরদারি বোট, ল্যান্ডিং ক্রাফ্ট অ্যাসল্ট -সহ আধুনিক নজরদারি ব্যবস্থা। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই সকল সরঞ্জাম চিনকে রুখে দিতে সক্ষম হবে বলেই আশাবাদী সেনা৷
সেনাবাহিনীর হাতে অত্যাধুনিক এই সরঞ্জাম তুলে দিয়ে এদিন টুইট করেন রাজনাথ সিং৷ তিনি বলেন, “এই সকল সামরিক সরঞ্জাম সেনাবাহিনীর সক্রিয়তা বাড়াবে৷ একই সঙ্গে ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতেও সাহায্য করবে।”