মর্মান্তিক ঘটনা ঘটার পর পর চোদ্দ বছর সময় অতিক্রম করেছে। এর মাঝে ঘটনাচক্রে যুক্ত বেশ কিছুজন শাস্তি পেলেও, অধরাই থেকে গেছে অনেকে। এরইমাঝে মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী সাজিদ মাজিদ মীরকে ১৫ বছরের সশ্রম কারাবাসের সাজা দিল পাকিস্তানের সন্ত্রাস দমন শাখা। পাক সন্ত্রাস দমন শাখার বরিষ্ঠ আইনজীবী সম্প্রতি এই খবর দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, একসময় জানা গিয়েছিল যে সাজিদের মৃত্যু হয়েছে। এরপর পাকিস্তানের সন্ত্রাসদমন শাখা নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানতে পারে সাজিদ মীর জীবীত। শুরু হয় সন্ধান। এরপর কিছুদিন আগে পাক সন্ত্রাসদমন শাখা সাজিদ মীরকে গ্রেফতার করে। জানা গিয়েছে, সাজিদ মীরকে গ্রেফতারের জন্য ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স পাক সন্ত্রাস দমন শাখাকে লাগাতার চাপ দিতে শুরু করে। একপ্রকার চাপে পরেই সাজিদকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, লাহৌরের সন্ত্রাসদমন আদালতে সাজিদের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে হামলার জন্য অর্থ সংগ্রহের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, জঙ্গিগোষ্ঠী লস্করের সামাজিক সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়ার সক্রিয় সদস্য ছিল সাজিদ। ২৬/১১ হামলার আর এক চক্রী ডেভিড কোলম্যান হেডলির সঙ্গে এই জঙ্গিরই প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল। প্রসঙ্গত, লস্করের হয়ে ২৬/১১ হামলার জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে একাধিক বার ভারতে এসেছিল হেডলি। পরে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই তাকে গ্রেফতার করে।
তবে, রাজনৈতিক মহলের একাংশ এই গ্রেফতারিকে একটু অন্য চোখেই দেখছে। তাদের মতে, ইমরানকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের ভাবমূর্তি অনেকটাই খাটো হয়েছে। তাছাড়া ইমরানের বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ নেই। বরং সে দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজের বিরুদ্ধে নানাবিধ অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া দুর্নীতিগ্রস্ত নওয়াজকে দেশে ফেরাতেও শাহবাজ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এমতাবস্থায় দেশের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করতেই ক্ষমতায় আসীন শাসক দল মুম্বই হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর করাচি থেকে জলপথে মুম্বইয়ে পা রেখে প্রথমে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস রেল স্টেশনে হামলা চালিয়েছিল আজমল কাসভ-সহ ১০ লস্কর জঙ্গি। তার পর একে একে কামা হাসপাতাল, লিওপল্ড ক্যাফে, তাজ হোটেল এবং ওবেরয রিসর্টের সদর দফতর এবং নারিমান হাউসে হামলা চালানো হয়। দীর্ঘ ৬০ ঘণ্টা গুলির লড়াইয়ের পর জঙ্গিদের নিকেশ করতে সক্ষম হয় পুলিশ এবং জঙ্গি দমন গোষ্ঠীর বিশেষ শাখা। কাসভ ছাড়া সকলেরই মৃত্যু হয়। এরপর দীর্ঘ কারাবাসের পর ২০১২ সালের নভেম্বরে ফাঁসি হয় কাসভের।