এযেন শিক্ষা আজ ভিক্ষে করার মতো অবস্থা। করোনা আবহে দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ স্কুল। লক ডাউনে বন্ধ মানুষের রুজি রোজগার। আর এহেন পরিস্থিতিতে এক দরিদ্র মেধাবি অতিথি শিক্ষককে পেটের তাগিদে করতে হলো পেশা বদল।
করণা পরিস্থিতিতে টানা বন্ধ স্কুল, অগত্যা পেটের তাগিদে ভ্যান চালাচ্ছেন মেধাবী অতিথি শিক্ষক। স্থানীয় বক্সিরহাট হাই স্কুলের বায়োলজির অতিথি শিক্ষক, স্কুলের মাইনে হাজার টাকা বাড়িতে অসুস্থ বাবা ভাই এবং মাকে নিয়ে পরিবারের মোট চারজন সংসার চালাতে চক ডাস্টার ছেড়ে হাতে নিতে হয়েছে ভ্যানের হ্যান্ডেল।
মাধ্যমিকে স্টার বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে ফার্স্ট ডিভিশন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস কোচবিহার বক্সিরহাট এর বাসিন্দা মনিদ্র দত্ত। দীর্ঘদিন বন্ধ শিক্ষক নিয়োগ তাই শিক্ষকতা করছেন অতিথি শিক্ষক হিসেবে। কিন্তু সেই কাজ কেড়ে নিয়েছে অতি মারি করোনা। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা দু দুবার স্ট্রোক হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসায় খরচ হয়েছে অনেক টাকা। অভাবের সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে ফুটপাতে ব্যবসা করছেন অতিথি শিক্ষক। অসুস্থ বাবাকে ভ্যান চালাতে দেবেন না বলেই নিজেই ভ্যান চালান তিনি। কার্যত লকডাউনে সেই আয়ও এখন তলানিতে ঠেকেছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ রুখতে, কার্যত লক ডাউন যার ফলে ছাত্র-ছাত্রী, পড়ানো নিয়েও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। প্রায় বন্ধ বললেই চলে। বিএড নিয়ে পড়ার ইচ্ছে থাকলেও কোনো উপায় নেই, দারিদ্রের কাছে কি হার মানবে মেধাবী ছাত্র? সরকারের কাছে মনিন্দ্রের বাবা-মার করুন আরজি, ছেলের পড়াশুনার সুযোগ করে দেয়া হোক।
বহুদিন ধরে রাজ্যে থমকে রয়েছে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ। ফলে পাশ করেও চাকরি পাচ্ছেন না হবু শিক্ষকেরা। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তার উত্তর নেই কারো কাছে। এভাবেই কি তাহলে হারিয়ে যাবে মনিন্দ্রের মত মেধাবী ছাত্ররা? এই একটাই প্রশ্ন থাকলো সরকারের কাছে।