আবার একবার হাজিরা এড়িয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন তিনি। সিবিআই তাঁকে হাজিরার জন্য ডেকেছিল। চারবার ‘পাত্তা’ না দিলেও পঞ্চমবার তিনি হাজিরার জন্যই কলকাতায় এসেছিলেন বলে জানা গিয়েছিল। কিন্তু শহরে আসার পর নিজাম প্যালেসের দিকে না গিয়ে তাঁর গাড়ি ঘুরেছিল এসএসকেএম হাসপাতালের দিকে। হৃদযন্ত্রের সঙ্গে শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে দিন কয়েক আগেই তাই পিজির উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হন অনুব্রত মণ্ডল। তারপর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকটা দিন। পরপর একাধিক রোগ ধরা পড়েছে তাঁর। সর্বশেষ সংযোজন, অণ্ডকোষের সংক্রমণ। তাহলে এখন কেমন আছেন তৃণমূলের ‘কেষ্ট’?
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকেরা সম্প্রতি বৈঠক করেছেন কারণ তাঁর অণ্ডকোষে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে বিষয়টি হয়তো বাড়াবাড়ি এবং অস্ত্রপচার করতে হবে। কিন্তু চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে, এই মুহূর্তে তার কোনও দরকার হবে না। আপাতত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসা শুরু করেছে মেডিক্যাল বোর্ড। একই সঙ্গে জানান হয়েছে, অনুব্রত মণ্ডলের বুক ও ফুসফুসেরও চিকিৎসা চলছে একসঙ্গে। হাসপাতালে ভর্তির পর অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছিল অনুব্রতকে। এখনও প্রয়োজন পড়লে মাঝে মধ্যেই তাঁকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে বলে খবর।
এর আগের এক মেডিক্যাল বুলেটিনে হাসপাতাল জানিয়েছিল, তাঁর সিওপিডি, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, ওবিসিটির সমস্যা, সুগারের মতো ক্রনিক রোগের সমস্যা রয়েছে। পাশাপাশি চিকিৎসকরা আরও জানিয়েছিলেন তাঁর হরমোনাল কিছু সমস্যাও রয়েছে যেগুলি সাম্প্রতিক সময়ে আরও বেড়ে গিয়েছে। এত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও অনুব্রতকে ‘ভরসা’ করছে না সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। কিছুদিন আগেই হাসপাতালে চিঠি দিয়ে তাঁর শারীরিক সম্পর্কে খোঁজ নেয় তারা। তবে হাসপাতালের তরফে যে রিপোর্ট তাদের পাঠানো হয়েছিল তাতে খুশি হয়নি সিবিআই। তাদের ভাবনায় রয়েছে কল্যানী এইমসের চিকিৎসকরা। তাদের দিয়ে অনুব্রতকে পরীক্ষা করানো হতে পারে আগামী দিনে, এমন সম্ভাবনা প্রবল।
আসলে তাঁর রোগ সম্পর্কে স্পষ্ট নয় সিবিআই। রোগ কতটা গুরুতর সেটা ‘যাচাই’ করতেই নয়া ভাবনা নিয়েছে তারা। আসলে বিরোধীরা মনে করছে যে, সিবিআই তদন্ত থেকেই বাঁচতেই অনুব্রত মণ্ডল হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হয়েছেন। সেই নিয়ে শাসক দলকেও নিশানা করা হয়েছে। তাদের বক্তব্য, দলীয় কোনও শীর্ষ নেতাই তাঁকে হাসপাতালে দেখতে যাননি, তাহলে কীসের বড় রোগ। যদিও অনুব্রত আগেই চিঠি দিয়ে সিবিআইকে জানিয়েছিলেন, তাঁর নিজাম প্যালেসে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল কিন্তু এই অবস্থায় তিনি যেতে পারবেন না। যদি সিবিআই চায় তাহলে তাঁকে হাসপাতালে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। তবে নিজাম প্যালেসে গিয়ে তলবে সাড়া দেওয়ার জন্য তিনি আরও ৪ সপ্তাহ সময় চেয়েছেন।