বুদ্ধ পূর্ণিমা, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি হিন্দুদের কাছেও এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২৬ মে বুধবার গোটা বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে বুদ্ধ পূর্ণিমা বা বুদ্ধ জয়ন্তী। এদিনই জন্মগ্রহণ করেছিলেন বুদ্ধদেব। হিন্দু ধর্ম অনুসারে শ্রী বিষ্ণুর নবম অবতার হিসেবে গণ্য করা হয় গৌতম বুদ্ধকে।
৫৮৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এই দিনে বুদ্ধদেব সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেন এবং ৫৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এই দিনে তিনি মহানির্বাণ লাভ করেন। তাই বৈশাখ মাসের এই পূর্ণিমা ‘বুদ্ধপূর্ণিমা’ নামে খ্যাত। এই বৈশাখী পূর্ণিমাতেই বোধি বা মহানির্বাণ লাভ করেছিলেন কপিলাবস্তুর রাজা শুদ্ধধনের পুত্র সিদ্ধার্থ। রাজপুত্র থাকা সত্ত্বেও রাজপরিবারের বিলাসবহুল জীবন ত্যাগ করে নেমে এসেছিলেন রাস্তায়। উপলব্ধি করেছিলেন প্রকৃত জীবনকে।
বৈশাখী পূর্ণিমাতেই গৃহত্যাগী রাজকুমার বোধি লাভ করেন এবং তারপরই তিনি গৌতম বুদ্ধ নামে সর্বত্র পরিচিত হন। তিনি তথাগত নামেও পরিচিত ছিলেন। আড়াই হাজার বছর আগে বোধি জ্ঞান লাভ করার পর গৌতম বুদ্ধ তাঁর শিষ্যদের মধ্যে যে ধর্ম প্রচার করেছিলেন, তাই বৌদ্ধ ধর্ম নামে পরিচিত।
ভারতে এই দিনটি যেমন বুদ্ধ পূর্ণিমা বা বুদ্ধ জয়ন্তী নামে উদযাপন করা হয়, তেমনই শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, কম্বোডিয়া, জাভা, ইন্দোনেশিয়া, তিব্বত, মঙ্গোলিয়ায় এই দিনটি ভেসক নামে পালিত হয়। চান্দ্র ক্যালেন্ডার অনুসারে নির্ধারিত হয় বলে প্রতি বছর বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন পালটে যায়। তবে বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা বৈশাখী পূর্ণিমাই বুদ্ধ পূর্ণিমা নামে পরিচিত। এই বছর বুদ্ধদেবের ২৫৮৩তম জন্মজয়ন্তী পালিত হচ্ছে।
বুদ্ধগয়ায় একটি বটগাছের নীচে বসে টানা ৪৯ দিন ধ্যান করেন গৌতম বুদ্ধ। তারপরই বোধি লাভ করেন তিনি। জীবজগতকে কষ্টের হাত থেকে মুক্তি দেওয়ার পথ প্রাপ্ত করেন তিনি। মাত্র ৩০ বছর বয়সে স্ত্রী, পুত্র ও সিংহাসনের মায়া ত্যাগ করে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন গৌতম বুদ্ধ। প্রচার করেন বৌদ্ধ ধর্মের। তাঁর প্রচারিত ধর্মের মূল কথা অহিংসা, দয়া ও ভালোবাসা।