করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে তদন্ত যতটা এগিয়েছে এবং আনুষাঙ্গিক তথ্যপ্রমাণ এখনও পর্যন্ত যা মিলেছে, তার উপর ভিত্তি করে ভারতীয় বিজ্ঞানী মোনালি রাধালকর মনে করছেন, উহানে গবেষণাগার থেকেই ছড়িয়েছে এই ভাইরাস।
মোনালি এবং তাঁর স্বামী রাহুল বাহুলিকর, দুজনে মিলে কোভিডের উৎপত্তি জানতে গবেষণা চালাচ্ছেন। এই গবেষণা চলছে মোনালি আগরকর রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং রাহুল বিএআইএফ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে। তাঁরা গত বছর অক্টোবরে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন যাতে কোভিডের উৎপত্তি নিয়ে তাঁরা সওয়াল করেছিলেন।
প্রথমত তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, সার্স ২০০৪ এবং কোভিড-১৯ এর মধ্যবর্তী সময়ে, ছোট আকারে হলেও, চিনে অস্বাভাবিক ধরনের নিউমোনিয়ার দেখা মিলেছিল? তাঁদের দ্বিতীয় বক্তব্য, ইউনান প্রদেশে হর্সশু বাদুড়ের থেকে সার্স-কোভ-২ এর যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল, তার সঙ্গে করোনাভাইরাসের ‘বিটা’ প্রজাতির খুব মিল। ২০১৩ সালে ইউনান প্রদেশের মোজিয়াং খনিতেও এর সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। এ প্রসঙ্গে রাধালকর এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘শুরু থেকে একটা কথা বলা হচ্ছিল, বাদুড় ভাইরাসের আধার। সে সময় আমি উহানে হর্সশু বাদুড়ের খোঁজ চালাই। কিন্তু এই ধরনের বাদুড় মূলত পাওয়া যায় চিনের দক্ষিণাংশে ইউনান এবং গুয়াংদং প্রদেশে। তারা ১৫০০ থেকে ১৮০০ কিলোমিটার পেরিয়ে উহানে এল কী করে? তখন বাদুড়ের বিষয়টি লঘু করতে প্যাঙ্গোলিন থেকে কোভিড ছড়ানোর বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও গবেষণাপত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।’’ রাধালকরের গবেষণা অনুযায়ী উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির প্রধান বিজ্ঞানী শি ঝেংলি বলেছিলেন, ২০১২ সালের এপ্রিলে ইউনানের মোজিয়াংয়ে তামার খনির ৬ শ্রমিকের মধ্যে নিউমোনিয়ার মতো অস্বস্তি দেখা গিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৩ জনের মৃত্যুও হয়েছিল। এই ধরনের বিভিন্ন তথ্য চিন সময়ে সময়ে গোপন করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
অবশ্য রাধালকর বিশ্বাস করেন না যে করোনাভাইরাস প্রাকৃতিক। এ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র দাবি কতটা ঠিক, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে তাঁর। তিনি জানিয়েছেন, করোনার উৎপত্তি জানতে হু-র যে প্রতিনিধি দল গিয়েছিল উহানে, তাদের মধ্যে ১৭ জন হু-র বিজ্ঞানী এবং ১৭ জন চিনের বিজ্ঞানী ছিলেন, তাই সেই তদন্তে চিনা সরকারের প্রভাব থাকার সম্ভাবনা প্রবল।