ফোনকল

বহুদিন পর একটা বিরক্তিকর ফোন কল ঘুম ভাঙালো। এমনিতেই সারাদিন খেটে মরা তার উপর এইসব ফোন। ঝাপসা চোখে ফোনের স্ক্রীনে তাকাতেই ভেসে উঠলো দীপ্তর নম্বরটা।বিরক্তিকর হয়ে ওঠা পরিবেশটা একটু ঝিমিয়ে গেলো মৃদু খুশীর মেজাজে।
ফোনটা কোনোভাবে তোলা হলো। প্রথমেই কানে বাজলো সমস্ত শব্দের গহ্বর চিড়ে

“আমি এসে গেছি”
“কী বলছিস!”
– “হুম বাগডোগড়া এয়ারপোর্টে ।”
-“গাড়ি পেয়েছিস !”
– ” তোকে না বলেছিলাম  সময় মতো ড্রাইভার পাঠিয়ে দিবি গাড়ি শুদ্ধ!”
– “হ্যাঁ!হ্যাঁ ! মনে আছে
মনোজ ওখানেই আছে”।

প্রায় দুইবছর পর দীপ্ত ফিরছে ।
এখন শুধু দীপ্ত নয় বিখ্যাত পরিচালক দীপ্তময় মল্লিক। গতকাল থেকে লোডশেডিং চলছে শহর জুড়ে।তারমধ্যে দীপ্তর ফিরে আসা।যা চলছে গত কদিন আর এতকিছুর মধ্যে দীপ্ত যে ফিরছে সেটা মাথায় রাখাই মুশকিল।তবুও ভাগ্যিস মনোজদা ওখানেই ছিলো।

শেষবার দীপ্ত অনেক বার বলেছিলো চলে আয় মুম্বাই ওই  জলপাইগুড়িতে কিচ্ছু নেই।এখানে আয় আমার সাথে কাজ কর। অভিনয়ে সুযোগ আমিই দেবো করে। না যেতে চায়নি সৌম্য। এই শহরে অনেক স্মৃতি ওর। দীপ্ত বোধহয় আগের মতো নেই!সৌম্যর আরও মনে পড়ে যাচ্ছে দীপ্ত আর ওর সম্পর্কটা।আর পাঁচটা সম্পর্কের  মতো নয়। বাড়িতে  সেবার ওদের দুজনকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলেছিলো সৌম্যর মা ।তারপর দীপ্তর ঠিকানা বদলে মুম্বাই। দিন রাত কেঁদেছিলো সৌম্য। বিয়ের জন্য বাড়ি থেকে কত মেয়ে দেখা হলো।ছেলের মেয়েদের প্রতি কোনো আগ্রহ নেই। ওর ওই দীপ্তকেই চাই অবশেষে ওদের যুক্তিই খাটলো। মা বাবা চলে যাওয়ার পর। ভাবতে ভাবতে আনন্দে শিহরিত হচ্ছিল সৌম্য।

আবার একটা ফোন এলো।সৌম্য রিসিভ করতেই
-” কী রে কখন আসছিস !কতক্ষণ বসবো ।দীপ্তোর বডিটা নিতে হবে তো!জলদি আয়”…