সোমবার কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান এবং প্রকল্প প্রয়োগ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে প্রকাশিত হয়েছে উপভোক্তা মূল্য সূচকের তথ্য। সেই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, জুন মাসে মুদ্রাস্ফীতির হার পৌঁছে গিয়েছে ৬.০৯ শতাংশে। সরকার আশা করেছিল, মুদ্রাস্ফীতির হার সাড়ে ৫ শতাংশের নীচে থাকবে। কিন্তু পণ্য পরিবহণের ব্যয় বৃদ্ধির জেরেই বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে বহুগুণ। পণ্য পরিবহণের খরচ বেড়ে যাওয়াটা অবশ্য প্রত্যাশিত। কারণ, জুন মাস থেকে লাগাতার বেড়েছে পেট্রল ও ডিজেলের দাম। দিল্লিতে ডিজেলের দাম পেট্রলকে ছাপিয়ে গিয়েছিল। প্রধানত ডিজেলের দাম বৃদ্ধির উপরই নির্ভর করে নিত্যপণ্যের দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম কম হলে দেশের অভ্যন্তরে পেট্রপণ্যের দামও নিম্নমুখী হয়।
মার্চ মাস থেকেই বিশ্বজুড়ে প্রায় সর্বত্র লকডাউন শুরু হওয়ার পর তেলের চাহিদা তলানিতে এসে দাঁড়ায়। ক্রমাগত অশোধিত তেলের দাম গ্যালন প্রতি কমতে থাকে। কিন্তু সেই দামের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ভারতে পেট্রপণ্যের দাম কমেনি। কারণ, যে সময় অশোধিত তেলের আন্তর্জাতিক বাজারের দাম কমছিল, তখন ভারত সরকার নতুন করে শুল্ক ও সেস আরোপ করে। প্রাথমিকভাবে সেই শুল্ক বৃদ্ধির আঁচ সাধারণের গায়ে লাগেনি। কারণ, দীর্ঘদিন পরিবহণ ব্যবস্থাই থমকে ছিল।
এরপর ধীরে ধীরে লকডাউন পর্ব থেকে বেরিয়ে এসে শুরু হয় আনলক পর্ব। বিশ্বজুড়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফেরার প্রবণতা চালু হওয়ায় একদিকে জ্বালানির চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকে, পাশাপাশি অশোধিত তেলের আন্তর্জাতিক দামও কিছুটা বেড়ে যায়। সেই সময় থেকেই ভারতে অস্বাভাবিক হারে পেট্রল ও ডিজেলের দাম বেড়ে যায়। ঊর্ধ্বমুখী হয় রান্নার গ্যাসের দামও। যেহেতু ইতিমধ্যেই শুল্ক চাপানো হয়েছে, তাই ভারতের বিভিন্ন শহরে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকে পেট্রপণ্যের দাম। প্রত্যাশিতভাবেই শুরু হয় মূল্যবৃদ্ধি ।
সোমবার প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, মাছ, মাংসের মুদ্রাস্ফীতির হার হয়েছে ১৬ শতাংশের বেশি, তেলের দাম ১২ শতাংশ, ডালের মুদ্রাস্ফীতির হার প্রায় ১৭ শতাংশ। মশলার দাম ১১ শতাংশের বেশি। একমাত্র সব্জি এবং ফলের দাম বিগত মাসগুলির তুলনায় কমেছে। বিগত এক মাসে সোনার দামও আকাশছোঁয়া।