খোঁজ মিলছিল আগেই কিন্তু এবার তার জানা গেলো তার আকার। মহাকাশে বৃহত্তর ধূমকেতুর হদিশ মিলেছিল বেশ কয়েক বছর আগেই। তবে এবার ধরা পড়ল তার চেহারার আকৃতি। জানেন কত বড় এর আকার? একটা সহজ উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যাক৷ টালা থেকে টালিগঞ্জের দূরত্ব ১৩ কিলোমিটার৷ কলকাতাকে একটি বৃত্ত হিসাবে ধরা হলে এই দৈর্ঘ্যকে শহরের আড়াআড়ি দূরত্ব বা ‘ব্যাস’ বলা যেতে পারে৷ আর মহাকাশের সবচেয়ে বড় ধূমকেতুর ব্যাস ১৩০ কিলোমিটার৷ অর্থাৎ এর মধ্যে পাশাপাশি বসানো যাবে ১০টি কলকাতাকে৷
বৃহত্তম এই ধূমকেতুর নাম বেহেমথ৷ ২০১০ সালে প্রথম এই ধূমকেতুটির খোঁজ পান নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানীরা৷ তবে এর আকার বুঝতে লেগে গেল আরও ১২ বছর৷ বিজ্ঞানীদের দাবি, এ যাবৎ যত ধূমকেতু দেখা গিয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় হল বেহেমথ৷ সাধারণত ধূমকেতুর আকার লম্বাটে হয়। মূল অংশের পিছন দিয়ে গ্যাসের লম্বা আস্তরণ থাকে। সূর্যের যত কাছাকাছি আসে, সূর্যের তাপে তত বাড়তে থাকে এই গ্যাসের আস্তরণ। বেহেমথের পিছনের দিকে থাকা গ্যাসের আস্তরণের ভিতর থেকে ধূমকেতুর মূল অংশ বা নিউক্লিয়াসের মাপজোক চালাচ্ছে নাসার হাবল টেলিস্কোপ৷ নাসা জানিয়েছে, এতদিন যে সকল ধূমকেতুর হদিশ মিলিছে, তার মধ্যে বেহমথের নিউক্লিয়াস সবচেয়ে বড়৷ প্রায় ৫০ গুণ৷ ভর প্রায় ৫০০ লক্ষ কোটি টন। এর আগে আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড় ধূমকেতুর ভরের চেয়েও বেহেমথের ভর কয়েকশো হাজার গুণ বেশি।
বেহেমথের আরও একটি নাম রয়েছে৷ সেটি হল-—সি/২০১৪ ইউএন২৭১। তবে এটি বেহেমথ নামেই অধিক পরিচিত৷ যার অর্থ হল, অতিকায় দৈত্যাকার জন্তু৷ বিজ্ঞানারী জানাচ্ছেন, পৃথিবীর দিকে ঘণ্টায় প্রায় ৩৫ হাজার কিমি গতিবেগে ছুটে আসছে বেহেমথ। নাসার হিসেব বলছে, ২০৩১ সালে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি চলে আসবে এই দানবাকার ধূমকেতু৷ তবে এই ধূমকেতুর কারণে পৃথিবীর কোনও ক্ষতি হবে না বলেই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা৷ নাসা আশ্বস্ত করে জানিয়েছে, পৃথিবীর থেকে শনি যতখানি দূরত্বে রয়েছে, বেহমথও ততটাই দূরত্বে থাকবে।