সম্প্রতি অ্যান্টাসিডের প্যাকেজিংয়ে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি লেখার যে নির্দেশ জারি হয়েছে তাতে অনেকেই উদ্বিগ্ন বোধ করবেন। কারণ অ্যাসিডিটি বা অম্বল কমাতে যখন-তখন অ্যান্টাসিড পিল খেতে অনেকেই বেশ অভ্যস্ত। কিন্তু সমীক্ষায় জানা যাচ্ছে, দীর্ঘকাল অ্যান্টাসিড গ্রহণ করলে কিডনি ডিসঅর্ডার দেখা দিতে পারে। এবিষয়ে ফর্টিস হসপিটাল আনন্দপুর-এর কনসাল্টেন্ট নেফ্রোলজিস্ট ডা. পার্থ কর্মকার জানান, বাজারে অনেক রকম অ্যান্টাসিড পাওয়া যায়। আলোচ্য রিপোর্টটি পিপিআই বা প্রোটোন পাম্প ইনহিবিটর্স গ্রুপের অ্যান্টাসিড সম্পর্কিত। দীর্ঘকাল এই গ্রুপের অ্যান্টাসিড গ্রহণ করলে দুই রকমের কিডনির রোগ হতে পারে – অ্যাকিউট কিডনি ইনজুরি (একেআই) ও ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (সিকেডি)।
পিপিআই গ্রুপের অ্যান্টাসিডগুলির মধ্যে রয়েছে প্যান্টোপ্রাজোল, ওমেপ্রাজোল, রাবেপ্রাজোল প্রভৃতি। এগুলি ওভার-দ্য-কাউন্টার হিসেবে পাওয়া যায় এবং রোগীরা অনেকসময়ই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই এসব কিনে থাকেন। ডা. পার্থ কর্মকার বলেন, উচ্চ ক্রিয়েটিনিন লেভেল নিয়ে আসা রোগীদের মেডিকেশন হিস্ট্রি বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে তারা বিগত প্রায় ১০ বছর ধরে পিপিআই গ্রুপের অ্যান্টাসিড গ্রহণ করছেন। চিকিৎসাকালে এগুলো বাদ দেওয়ার ফলে কিডনির কার্যকারিতা যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারন মানুষের অনেকের মধ্যে একটা ধারণা রয়েছে যে হাইপারটেনশনের ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিকসের সঙ্গে অ্যান্টাসিডও খেতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই তারা ওষুধের দোকান থেকে এসব কেনেন।
কিন্তু আশঙ্কার বিষয় হল পিপিআই অ্যান্টাসিডের ফলে রেনাল কমপ্লিকেশন হলেও তার সেরকম কোনও লক্ষণ প্রকাশ পায় না। ডা. কর্মকার বলেন, অ্যান্টাসিড সেবনের কারণে যারা কিডনির সমস্যায় ভোগেন তাদের মধ্যে স্পষ্ট কোনও লক্ষণ দেখা যায়না। কিডনির রোগের সাধারন লক্ষণ যেমন পায়ের পাতা ফোলা, খিদে কমে যাওয়া ইত্যাদি এসব ক্ষেত্রে থাকেনা। যতদিনে তারা চিকিৎসকের কাছে যান ততদিনে অবস্থা উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছে গেছে।
তার মানে কী এটা যে অ্যান্টাসিড একেবারে এড়িয়ে যেতে হবে? ডা. কর্মকারের মতে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ বাদ দেওয়া বা খাওয়া উচিত নয়। যখন কোনও রোগীকে পিপিআই গ্রুপের অ্যান্টাসিড দেওয়া হয় তখন তা দেওয়া হয় বেশিমাত্রায় বুকজ্বালার কারণে, তবে এসব একটানা ৮ সপ্তাহের বেশি গ্রহণ করা ঠিক নয়। পরিবর্তে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ এইচ২ ব্লকার্স গ্রুপের অ্যান্টাসিড দেওয়া যেতে পারে, যেমন র্যানিটিডাইন ও ফ্যামোটিডাইন।