একে তালিবান ত্রাসে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে আফগানবাসী৷ এরই মাঝে দোসর হল আইসিস৷ আফগান জুড়ে আতঙ্ক ছিল কাবুল বিমান বন্দরের বাইরে বড়সড় হামলার ছক কষছে ইসলামিক স্টেট খোরাসান জঙ্গিরা৷ এবার সত্যি হল মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এই আশংকা৷ জোড়া বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কাবুল বিমানবন্দর৷ কাবুল বিমানবন্দর চত্বরের পরপর তিনটি বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৯০ জন আফগান নাগরিকের। নিহতদের মধ্যে ৬০ জন আফগান নাগরিক থাকার পাশাপাশি ১৩ জন মার্কিন সেনা রয়েছেন। আহত আরও বেশ কয়েকজনের চিকিৎসা চলছে।
এই হামলার প্রেক্ষিতে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস-খোরাসানকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর পরেই হামলাকারীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷ তিনি জানিয়েছেন, হামলাকীরদের খুঁজে বার করে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে৷ এই আক্রমণের মূল্য চোকাতে হবে৷’’ এই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে গলা ধরে আসে তাঁর৷ মঞ্চে দাঁড়িয়েই কেঁদে ফেলেন তিনি৷ এই পরিস্থিতিতে বাইডেন প্রশাসনের নির্দেশ, মার্কিন নাগরিকরা যেন বিমানবন্দরের বাইরে অপেক্ষা না করেন৷ আমেরিকার দূতাবাসের তরফে বলা হয়েছে, প্রশাসনের তরফে নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এই এলাকা এড়িয়ে চলুন৷
১৫ অগাস্ট কাবুল কব্জা করার পর থেকেই প্রায় গোটা আফগানিস্তানে শুরু হয়েছে তালিবানি রাজত্ব৷ বাগরাম এবং পুল-এ চাখরি জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় বন্দিদের৷ আফগানিস্তানে সন্ত্রাস দমন শাখার এক আধিকারিক জানান, ওই দুটি জেলে তালিবান, আল-কায়দা, আইএস এবং অন্যান্য অপরাধী মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার কয়েদি ছিল৷ কিন্তু আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে তালিবানের মতোবিরোধ রয়েছে৷ তাই এই সুযোগে তালিবানের দখলে চলে যাওয়া আফগানিস্তানে হামলা চালানোর চেষ্টা করবে আইএস৷ আবার আফগানিস্তানের মাটিতে আইসিস-এর প্রচুর স্লিপার সেলও রয়েছে৷ যা হামলার আশঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে৷
এদিকে, তালিবান ফগানিস্তান দখল করার পর থেকেই শুরু হয়েছে দেশ ছাড়ার হিড়িক৷ হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হাতে নিয়ে জড়ো হয়েছেন বিমান বন্দরের বাইরে৷ ভিরতে রয়েছে মার্কিন বাহিনী৷ আর বাইরে তালিবান৷ এই অবস্থায় আইসিস হামলা চালাতে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে৷ হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তালিবানও৷ গত কুড়ি বছর ধরে আফগানিস্তানে ছিল মার্কিন সেনা। তবে আমেরিকা সেনা সরাতেই মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই গোটা আফগান মুলুক দখলে নিয়েছে তালিবান। তালিবানের পাশাপাশি আফগানিস্তানে মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে জঙ্গি সংগঠন আইএস। এমনকী পাক মদতপুষ্ট লস্কর-এ-তইবা, জইশ-এ-মহম্মদের মতো একাধিক জঙ্গি সংগঠন আফগানিস্তানে আরও বেশি সক্রিয় হচ্ছে।