রোহিণী বুঝতে পারছে তার দিন শেষ হয়ে আসছে । একটাই চিন্তা ছেলেটার সঙ্গে দেখা হবে তো ? ছেলেটা এখন দিল্লীতে । কিসের যেন মিটিং আছে । তখন সকলে বলেছিল রোহিণী ছেলেকে লেখাপড়া শেখাবার জন্যে যে নিজের শরীর পাত করছিস এই ছেলে পরে তোকে দেখবে ? একদিন দুপুরে রোহিণীর ঘুম ভেঙে পাশে ছেলেটাকে না দেখে ভাবে ছেলেটা এখন গেল কোথায় ? এই পরিবেশ ভাল না বলে যতটা সম্ভব ছেলেকে আগলে রাখার চেষ্টা করে । তাদের কাজ মানুষকে খুশী করা আর খুশী করতে না পারলে
একটা রাত নষ্ট হয়ে যায় । রোহিণীর এই কাজটা করতে আর ভালো লাগে না কিন্তু না করেও যে কোনো উপায় নেই । অনেকগুলো মানুষের ভরনপোষনের দায়িত্ব যে তার ওপরে । রোহিণী জানে এই দুর্বিষহ জীবন থেকে উদ্ধার পেতে চাইলেও আর পারবে না কারণ এটা হচ্ছে চক্রবূহ । ঢোকার পথ আছে কিন্তু বেরোবার পথ নেই। সেদিন উঠে অবাক হয়ে দেখে আদিত্য একমনে বই দেখে খাতায় লিখছে । আজ সকালে কোন এক এন জি ও থেকে এই মহল্লার বাচ্চাদের বই খাতা পেনসিল দিয়ে গেছে । সেই থেকে ছেলেটা বই খাতা পেনসিল নিয়েই পড়ে আছে । আদিত্য মুখ তুলে মাকে দেখে বলে দেখো তো মা লেখাটা ঠিক হয়েছে না ? আদিত্য করুন মুখে বলে মা গেটে দাঁড়িয়ে দেখি কতো ছেলে স্কুলে যাচ্ছে । আমি কবে স্কুলে যাবো মা ? ছেলের কথা শুনে আর সুন্দর লেখা দেখে রোহিণী মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে যায় । মনে মনে ভাবে ছেলেটার যখন এতো পড়াশুনায় মন আর এতো স্কুলে যাবার ইচ্ছে তখন ওকে ভর্তি করতেই হবে। পরের দিন এ কথা আশপাশের ঘরের প্রতিবেশিনীরা শুনে হাসাহাসি করতে শুরু করলো । পদ্মদি হাসতে হাসতে বলে সত্যি তোর কি শখ রে রোহিণী ? তোর ছেলেকে স্কুলে ভর্তি নেবে ? টগর দি টিপ্পনী কাটে ছেলের বাপের কি পরিচয় দিবি রে ? সোহাগদি বলে লেখাপড়া শিখে দেখবি তোকে আর মা বলে পরিচয় দেবে না । চারিদিক থেকে নানা মন্তব্য ছিটকে আসতে লাগল । কোনো উত্তর না দিয়ে রোহিণী ছেলের হাত ধরে মায়ের মন্দিরে গিয়ে সাহায্যকারী ছেলেটাকে দিয়ে পুজো পাঠিয়ে দূর থেকে প্রণাম করে ছেলেকে নিয়ে একটু দূরের স্কুলে ভর্তি করতে গেল । সেই স্কুলে ভর্তি নিলো না দেখে অনেক গুলো স্কুলে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে একটা গাছের নীচে ছেলেকে নিয়ে বসে পড়ল। সব স্কুলে একই প্রশ্ন ছেলের বাবার পরিচয় কি ? বাবার পরিচয় নেই শুনে পারলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বার করে দেয় । একটা স্কুলের দিদিমণি তো মুখের ওপর কঠোরভাবে বললেন তুমি ভাবলে কি করে তোমার ছেলেকে আমরা স্কুলে ভর্তি নেবো ? এক্ষুনি বেরিয়ে বেড়িয়ে যাও এখান থেকে । এই অপমানে প্রথমে রোহিনীর প্রচন্ড রাগ হয়ে গেছিল । অনেক কষ্টে চুপ করে ছেলের হাত ধরে স্কুল থেকে বেরিয়ে এসেছে । বাবার পরিচয় নেই বলে যে ছেলেটা লেখাপড়া শিখতে চায় সে মূর্খ হয়ে থাকবে ? এ তোমার কেমন বিচার ঠাকুর ? এমন সময় তাদের মহল্লার কাছের স্কুলের হেড মাস্টার মশাই তাদের এই ভাবে বসে থাকতে দেখে কাছে এসে কারণ জিজ্ঞাসা করলেন । তিনি খুব রাশভারী ও উদার মনের মানুষ বলে পরিচিত । রোহিণী কাঁদতে কাঁদতে বলে ছেলেটার খুব লেখাপড়া করার ইচ্ছে মাস্টার মশাই কিন্তু কোনো স্কুল ভর্তি নিল না । মাস্টার মশাই দেখেন আদিত্য মাথা নীচু করে বসে আছে । মাস্টার মশাই বিনোদ বাবু বললেন মাথা নীচু করে বসে থাকলে চলবে না বাবা , শোনো সব প্রতিবন্ধকতা দূরে ঠেলে সরিয়ে লেখাপড়া শিখে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে । হেড স্যার বিনোদ বাবু রোহিণীদের স্কুলে নিয়ে গিয়ে আদিত্যকে স্কুলে ভর্তি করে নিলেন । ছেলের স্কুলে ভর্তির আনন্দে রোহিণী মিষ্টি এনে সবার ঘরে ঘরে দিয়ে আসে । আদিত্য রোজ স্কুলে যায় আর মন দিয়ে লেখাপড়া করে কারণ হেড স্যারের কথাটা তার মনে গেঁথে গেছে । মাঝে মাঝে রোহিণীর মনে হয় ছেলেটা কোনো কারণে কষ্ট পাচ্ছে । জিজ্ঞাসা করলে বলে কি আর হবে ? স্কুলের সব বন্ধু কি সমান হয় মা ? কেউ কেউ আমাকে ঘেন্না করে , পাশে বসতে পর্যন্ত দেয় না । খারাপ খারাপ কথা বলে আবার কতো বন্ধু আমাকে ওদের বাড়ি নিয়ে যায় । ওদের বাড়ি বসে আমরা অঙ্ক করি । ওরা জানে আমি কোথায় থাকি তবুও আমাকে ওরা বন্ধু ভাবে । আন্টি সকলের জন্যে খাবার করে দিয়ে যান । ওদের কি সুন্দর বাড়িঘর মা । আমার শুধু খারাপ লাগে ওদের আমাদের বাড়ি আনতে পারি না । তুমি চিন্তা কোরো না মা । আমি ছাতে যাই ওখানে নির্জনে আমার ভালো পড়া হয় । দেখতে দেখতে আদিত্য স্কুল , কলেজ পাশ করে উচ্চ শিক্ষা লাভ করে চাকরী করছে সঙ্গে একটা এন জি ওর সঙ্গে যুক্ত হয়ে নানা সমাজ সেবা করছে । রোহিণী ছেলের কাছ থেকেই শুনেছে। মা তুমি এবার খেয়ে নাও এরপর অনেকগুলো ওষুধ খেতে হবে বলতে বলতে ঘরে ঢোকে সুনিতা । রোহিণী ভাবে এই মেয়েটা খুব বোকা নাহলে ভালোবাসার মানুষকে অতিরিক্ত বিশ্বাস করে এই অন্ধ গলিতে ঠাঁই হয় ? এখানে এসে হাজার অত্যাচার সহ্য করেও সন্ধ্যে থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে চুপচাপ বসে থাকতো আর শুধু কাঁদতো । খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে রোহিণী কাছে টেনে নিলে সুনীতা বলে মাসী আমি এখান থেকে পালিয়ে যাবো । রোহিণী মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিল কোথাও গিয়ে নিস্তার নেই রে মা , হায়নার দল চতুর্দিকে ঘুরছে তোদের মতো মেয়েদের ছিঁড়ে খাবার জন্যে । এখানেও পাহারা আছে একবার ধরা পড়লে আর রক্ষা নেই । সুনিতা কাঁদতে কাঁদতে বলে আমি এখন কি করব মাসী ? কি করে এখানে এলি জিজ্ঞাসা করতে ধীরে ধীরে বললো বন্ধুর দিদির বিয়েতে গিয়ে অনিশ এর সঙ্গে পরিচয় । পরিচয় থেকে একসময় ওর সঙ্গে ভালোবাসায় জড়িয়ে পরলাম । কলেজ পালিয়ে দেখা করতাম । আমি ওকে খুব ভালবাসতাম আর বিশ্বাস করতাম । আমার বন্ধু জানতে পেরে আমাকে সাবধান করেছিল যে অনীশ ছেলেটা খুব একটা ভালো না রে , ওর অনেক দুর্নাম আছে । তুই ওর সঙ্গে সম্পর্ক রাখিস না । মাসী আমি বিশ্বাস করি নি । এতো সুন্দর অমায়িক ব্যাবহার , সরল হাঁসি যার সে কখনো খারাপ হতে পারে ? বাবা মা জানতে পেরে অনেক অশান্তি করেছেন শেষে আমার বিয়ের সমন্ধ দেখা শুরু করলেন । অনীশ কে বলতে ও বলল চলো আমরা পালিয়ে যাই । আমি চাকরী করে যা মাইনে পাই তাতে আমাদের চলে যাবে । আমার দেশের বাড়িতে ঠাকুমা পিসি আছেন । সেখানে গিয়ে বিয়ে করে পরের সপ্তাহেই তোমার বাড়িতে যাবো। বিয়ে হয়ে গেলে তোমার বাবা মা ঠিক মেনে নেবেন । মাসী আমি অনীশ কে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে ওর হাত ধরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম । ও যে আমাকে বিক্রি করে পালিয়ে যাবে আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। রোহিণী আনমনে বলে ভালোবেসে ঘর বাঁধার আশায় , চাকরী দেবার প্রলোভনে কতো শিক্ষিত , অশিক্ষিত মেয়ে যে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে আর পরিশেষে ঠাঁই হয় এই নরক কুন্ডে । রোহিণী সুনিতাকে দৃঢস্বরে বলেছিল তোর কিচ্ছু করতে হবে না । আজ থেকে তোর সব ভার আমার । সুনিতা বিহ্বল হয়ে বলে কি বলছো মাসী ? এরা আমাকে ছাড়বে ? আমি আদিত্যকে বলবো , ও সব ব্যাবস্থা করে দেবে । আজ থেকে আমি তোর মা আর তুই আমার ঘরে থাকবি । মনে মনে ভাবে নিজের জীবনটা তো এই নরক গুলজার করতে করতে শেষ হয়ে গেল । দেখি চেষ্টা করে একটা মেয়েকে অন্তত রক্ষা করে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে পারি কি না । আদিত্য কে গো মা ? সুনিতার কথায় রোহিণী হেঁসে বলে আদিত্য আমার ছেলে । ও এখন অনেক লেখাপড়া শিখে দিল্লীতে গেছে । ওকে লেখাপড়া শেখানোর জন্যে যারা নানা মন্তব্য করেছিল এখন আদিত্য নিজে তাদের ভরনপোষনের দায়িত্ব নিয়েছে । শুধু তাদের না এই মহল্লার সব বাচ্চাদের ভালো মন্দ এখন আদিত্যই দেখে। তখন জেদ করে স্কুলে ভর্তি না করলে আদিত্য ও এই মহল্লার ছেলেদের মত আড্ডাবাজ নাহলে কুসঙ্গে পড়ে যেত । সুনিতার কথা সব জানালে আদিত্য জানিয়েছে মা তুমি ঠিক কাজ করেছ । তুমি সুনিতাকে তোমার কাছে রাখো আর খরচের কথা ভেবো না । বাকি সব আমি বুঝে নেবো । সুনিতা আজ শরীরটা একদম ভাল লাগছে না রে । আদিত্য আসা পর্যন্ত আমাকে বাঁচতেই হবে । তোর একটা ব্যাবস্থা না করে আমি মরেও শান্তি পাবো না । সুনিতা হেঁসে বলে তোমার বাঁচতেই হবে । এই দেখো মা তোমার আদিত্যর ছবি খবরের কাগজে বেরিয়েছে । পাশের ঘরের তুর্কি আমাকে পেপারটা দিয়ে বললো এটা আদিত্যদার ছবি। রোহিণী চমকে উঠে বলে ওমা সেকি ,কেন ? পড় দেখি কি লিখেছে ? মা আদিত্যদা বিভিন্ন দেশের বার বনিতাদের সন্তানদের আত্ম মর্যাদা ফিরিয়ে দেবার কথা , তাদের শিক্ষার প্রসারের কথা , তারা যেন হতাশ হয়ে নেশাগ্রস্ত না হয়ে নানা কাজ শিখে আত্মনির্ভরশীল হতে পারে আর তাদের উন্নতির জন্যে আদিত্য দা নিজে সরকারের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেছেন । সরকার ও নানা এনজিও থেকে আদিত্যদাকে সাহায্য করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে । রোহিণী বলে সুনিতা সে যে নিজের জীবন দিয়ে বুঝেছে তাদের মতো সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত হবার জন্যে কতো বাঁধাবিপত্তি অতিক্রম করতে হয় । মা তুমি এত ভালো মানুষ হয়ে এই জীবনে এলে কি করে ? আমার বাড়ির অবস্থা খুব খারাপ ছিলো রে । আমরা পাঁচ ভাই বোন । বাবা পরের জমিতে কাজ করে যা আনতো কোনো রকমে চলে যেত । বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় সংসার অচল হয়ে পড়ে । ছোটো ছোটো ভাই বোনরা খেতে পাচ্ছে না দেখে আমি আর থাকতে পারলাম না । পাড়ার বিনুদিকে শহরে চাকরী করতে যেতে দেখে কাজের জন্যে ধরে পড়লাম । বিনুদি বললো কাজ ঠিক করে দেবো কিন্তু আমার মতো মাসে একবার বাড়ি আসতে পারবি । যা টাকা পাবি তোদের দিন ঘুরে যাবে । আমি বাবা মাকে বুঝিয়ে বিনুদির সঙ্গে শহরে এলাম চাকরী করতে । তখন কি আর জানতাম কি সর্বনাশ আমার হতে চলেছে । যখন বুঝলাম তখন আমি নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি । তবে একটাই শান্তনা আমার জীবনটা শেষ হয়ে গেলেও আমি দুই বোনের বিয়ে দিয়েছি , দুই ভাইকে জমি কিনে দিয়েছি । ওরা বিয়ে করে ভালই আছে । আমার ভাইদের ছেলেমেয়েরা শুনেছে যে আমার জন্যেই ওদের কষ্ট দুর হয়েছে তাই আজও আদিত্য মামার বাড়ি গেলে সবার কাছ থেকে ভালোবাসা পায় । সুনিতা , মা বাইরে কার যেন পায়ের শব্দ শুনতে পেলাম ? আমি এসেছি মা বলতে বলতে ঘরে ঢোকে আদিত্য । রোহিণী আনন্দে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে । তারপর সুনিতাকে দেখিয়ে বলে এই দেখ বাবু আমার মেয়ে সুনিতা । আমার আর বেশী সময় নেই রে বাবা তুই আমাকে কথা দে আমি যখন থাকব না তখন তুই সুনিতাকে দেখবি ? আদিত্য চোখে জল নিয়ে বলে তুমি শান্ত হও মা , আমার ওপর বিশ্বাস রাখো । রোহিণী যেন নিশ্চিন্তে চোখ বন্ধ করল । এর দিন পনের পরে রোহিণীর অভিশপ্ত জীবনের সমাপ্তি ঘটে । আদিত্য , সুনীতা অনেক চেষ্টা করেও মাকে বাঁচাতে পারলো না । আদিত্য মায়ের মালা দেওয়া ছবিটার দিকে তাকিয়ে ভাবছে দেখতে দেখতে এক বছর হয়ে গেল তুমি চলে গেছো মা । তোমার দেখানো পথে আমি এই এক বছর ধরে চলেছি । মা আমি আমার জীবন দিয়ে বুঝতে পেরেছিলাম পতিতা পল্লীর মানুষদের বা তাদের সন্তানদের কোনো সম্মান নেই । এটা মানুষ বোঝে না যে প্রদীপের আলোর নিচেই অন্ধকার থাকে । আর এই অন্ধকার থাকে বলেই আলোর এতো মহিমা । আমি দিল্লী মুম্বাই পুনে আরো নানা জায়গায় সরকারকে ও সাধারণ মানুষকে এটাই বোঝাতে চেয়েছি পতিতাদেরও সম্মান আছে । আর পাঁচটা পেশার মতো পতিতাবৃত্তিও একটা পেশা । তারা স্বেচ্ছায় এই পেশায় আসে না । পরিস্থিতি তাদের বাধ্য করে এই পেশায় আসতে । আমি প্রচার করি নিষিদ্ধ পল্লীর ছেলেমেয়েদের ও লেখাপড়া শেখার অধিকার আছে । সুযোগ পেলেই এইসব পিতৃপরিচয় হীন ছেলেমেয়েরাও নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে আমি সেই চেষ্টাই সারা জীবন করে যাবো মা । আমার এই সমাজ চেতনার কাজে নিষিদ্ধ পল্লীর ছেলেমেয়েরাও আমাকে সহযোগিতা করে চলেছে । তুমি আমাকে আশীর্বাদ করো মা আমি যেন এই সত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারি । সুনিতা এক কাপ চা নিয়ে ঘরে এসে বলে কি দেখছো আদিত্য দা ? মায়ের ছবিটা খুব সুন্দর সাজিয়েছ আর ঘরটাও সুন্দর সাজিয়েছ । আমি প্রতিদিনই মায়ের ছবিতে মালা দি । আমি একটা এন জি ওর সঙ্গে যুক্ত হয়ে নানা সমাজ সেবা করি । মা বলেছিলেন ওনার অবর্তমানে আমি যেন এই ঘরে বাচ্চাদের স্কুল করি । ছোটো থেকে স্কুলে গেলে শিশুদের ভালো অভ্যাস তৈরী হয় ।
এই ঘরে সকালে বাচ্চারা পড়তে আসে আর অন্য সময় এন জি ওর অফিস হয় । এই ঘরে শুধু এই মহল্লার বাচ্চারা না কাছাকাছি বস্তির বাচ্চারাও পড়তে আসে । বাড়িওয়ালী দিদা ,পদ্ম মাসী আরও সবার সহযোগিতায় এই ঘরের রাস্তার দিকে দরজা আর বারান্দা করে গ্রিল দিয়ে ঘিরে দিয়েছি । এই বয়সে ওদের খাওয়া থাকার ব্যাবস্থা করে দিয়েছ বলে ওরা তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ আদিত্য দা । সুনীতা মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে আমরা এইভাবে সমাজ সেবা করে যাবো । মানুষের মনের অন্ধকার দূর করতেই হবে । এসো আজ মায়ের ছবির সামনে দাঁড়িয়ে প্রণাম করে আমরা এই ব্রতে ব্রতী হই ।
……………………………. ইতি ঘোষ