হিংসা রুখতে রাজ্য ‘নিরপেক্ষ’, উল্লেখ রাজ্যপালের ভাষণে

রাজ্যে ভোট-পরবর্তী হিংসা বলতে যা ঘটনা ঘটেছে, তার সবই নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব থাকাকালীন। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরে হিংসা মোকাবিলায় ‘দ্রুততার সঙ্গে এবং সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভাবে’ পদক্ষেপ করেছে বলে উল্লেখ করা হল বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণে। সেই ভাষণেই আরও দাবি করা হয়েছে, মহিলাদের বিরুদ্ধে ‘সংঘটিত অপরাধ’ও সাম্প্রতিক কালে কমে এসেছে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় রাজভবন থেকে এবং বাইরে গিয়েও অভিযোগ করে এসেছেন, রাজ্যে বিধানসভা ভোটের পরে হিংসার যে ঘটনা ঘটেছে, তা স্বাধীনতার পরে কখনও দেখা যায়নি। মহিলাদের উপরে অত্যাচারের ঘটনা নিয়েও তিনি নিয়মিত সরব। সেই রাজ্যপালের ভাষণেই এ বার এই প্রশ্নে রাজ্য সরকারের ঘোষিত অবস্থান ‘মান্যতা’ পেল।
রাজ্যপালের ১৪ পাতার বক্তৃতায় ভোট-পরবর্তী হিংসা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরে এ ব্যাপারে অবিলম্বে দ্রুততার সঙ্গে ও সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং অতি শীঘ্র স্বাভাবিকতা ফিরে আসে’। ভাষণে জানানো হয়েছে, ‘রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট এক বিশেষ শ্রেণির মানুষ নিজেদের কায়েমি স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখতে, সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের উদ্দেশ্যে’ সামাজিক মাধ্যমে হিংসা ও গোলমালের বিষয়ে ‘ভুয়ো খবর, জাল ভিডিয়ো, মিথ্যা তথ্য’ পরিবেশন করেছে। এই প্রবণতা রুখতে সরকার কঠোর পদক্ষেপ করেছে, এই সংক্রান্ত ৯৩টি মামলা হয়েছে এবং ৪৭৭টি পোস্ট সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে রাজ্যপালের ভাষণে উল্লেখ রয়েছে। বাংলা বিভাজনের ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ রুখতেও রাজ্য সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, এই কথা জানিয়ে ভাষণে বলা হয়েছে— ‘আমরা কোনও মূল্যেই রাজ্যকে ও রাজ্যের মানুষকে বিভক্ত করতে দেব না। আমাদের লক্ষ্য হল রাজ্য ও রাজ্যের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা, বিভাজন ঘটানো নয়’।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো-র ২০১৯ সালের তথ্যের প্রসঙ্গ টেনে রাজ্যপালের এই ভাষণে দাবি করা হয়েছে, দেশের মেট্রোপলিটান শহরগুলির মধ্যে কলকাতা মহিলাদের জন্য ‘নিরাপদতম’। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের কথা স্থান পেয়েছে ভাষণে। সেই সঙ্গেই করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের ভূমিকার প্রশংসা করে উল্লেখ করা হয়েছে, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই এক কোটি ৮৬ লক্ষ ডোজ়ের বেশি টিকা দেওয়া হয়েছে।