রাজনীতির মঞ্চে মাস্টারমাইন্ড পিকে

জল্পনা তুঙ্গে উঠল আগামী নির্বাচন নিয়ে৷ দেশের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে নিত্য ওঠাবসা তাঁর৷ গত কয়েক বছরে বিভিন্ন আঞ্চলিক দলকে জনপ্রিয় করে তোলার নেপথ্যে রয়েছে তাঁর মস্তিষ্ক৷ রাজনৈতিক পরামর্শদাতা তথা ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের রাজনৈতিক রণকৌশলে শক্তিশালী বিরোধীকেও মাত দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল৷ জাতীয় রাজনীতিতে জোর জল্পনা, ২০২৪-এ লোকসভা ভোটের আগে হয়তো কংগ্রেসের হাত ধরবেন পিকে৷ আর এতেই তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে তৈরি হয়েছে ধন্দ৷ কিন্তু জানেন কি রাজনীতির আঙিনায় পা রাখার আগে ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ছাত্র প্রশান্ত কিশোর কাজ করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের পাবলিক হেলথ স্পেশালিস্ট হিসেবে৷

২০১১ সালে রাজনীতির ময়দানে ভোট কুশলী হিসাবে তাঁর প্রথম আত্মপ্রকাশ৷ গুজরাত বিধানসভায় বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন নরেন্দ্র মোদী৷ তিনি যখন তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এলেন, তখন তাঁর রথের সারথি ছিলেন এই পিকে৷ ২০১৩ সালে ‘সিটিজেন্স ফর অ্যাকাউনটেবল গভরন্যান্স’ তৈরি করেন প্রশান্ত৷ এই পলিটিক্যাল নন অ্যাকশন কমিটি জন্মলগ্ন থেকেই তৈরি করতে শুরু করেছিল ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের নীলনকশা৷ ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর বিপুল জয়ের অন্যতম কুশীলব ছিলেন এই পিকে৷ ‘চায়ে পে চর্চা’ থেকে ‘থ্রিডি প্রচারসভা’, পদ্ম শিবিরের চোখ ধাঁধানো কর্মসূচির অন্যতম কারিগড় ছিলেন তিনি৷ সোশ্যাল মিডিয়াকে কী ভাবে প্রচারের শক্তিশালী মাধ্যম হিসাবে গড়ে তোলা যায়, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখেয়েছিলেন পিকে৷ যদিও ভোটের পর বিজেপি’র সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ভোট কুশলীর৷

পরবর্তী সময়ে ‘সিটিজেন্স ফর অ্যাকাউনটেবল গভরন্যান্স’-ই বদলে গিয়ে গড়ে ওঠে আউপ্যাক (PAC)। যে নামটি আজ গোটা দেশে অত্যন্ত পরিচিত৷ খুব কম সময়ের মধ্যেই দেশীয় রাজনীতিতে ছাপ ফেলতে শুরু করে প্রশান্ত কিশোরের ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি৷ তাঁর সংস্থার সদস্যরা সরাসরি কোনও  রাজনৈতিক দলের অংশ নন৷ কিন্তু তাঁরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সিদ্ধহস্ত।

২০১৫ সালে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে আইপ্যাক৷ ফের কাজ করে পিকে ম্যাজিক৷ তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসে নীতিশ সরকার৷ দেশ জুড়ে প্রশংসিত হয় পিকে’র তুখোর চিন্তাশক্তি, তাঁর রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজি৷ কিন্তু ২০২০ সালে জেডিইউ সঙ্গে সম্পর্কে ছেদ পড়ে তাঁর৷

উল্লেখ্য, এর আগেও কংগ্রেসের হয়ে কাজ করেছেন পিকে৷ ২০১৭ সালে পঞ্জাবে কংগ্রেসের জয়ের নেপথ্যে ছিল তাঁর রণকৌশল৷ তিনি ছিলেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দরের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা৷ ২০২১-এও ক্যাপ্টেনেট পরামর্শদাতা হিসাবে উঠে এসেছিল তাঁর নাম৷

উল্লেখ্য, এর আগেও কংগ্রেসের হয়ে কাজ করেছেন পিকে৷ ২০১৭ সালে পঞ্জাবে কংগ্রেসের জয়ের নেপথ্যে ছিল তাঁর রণকৌশল৷ তিনি ছিলেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দরের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা৷ ২০২১-এও ক্যাপ্টেনেট পরামর্শদাতা হিসাবে উঠে এসেছিল তাঁর নাম৷

২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশেও কংগ্রেসের হয়ে মাঠে নেমেছিল তাঁর সংস্থা৷ তবে, সাড়া জাগাতে পারেনি৷ তবে ওই বছরেই তিনি সাড়া ফেলেছিলেন ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডির রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবে৷ দলের ভোল বদলে তিনি নিয়ে এসেছিলেন ‘সামারা সংখ্যারাভাম’, ‘আন্না পিলুপু’, ‘প্রজা সংকল্প’৷ যার ফলও মেলে হাতেনাতে৷ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মসনদে বসেন রেড্ডি৷

২০১৯ সালে প্রশান্ত পা রাখেন বাংলায়৷ পাল্টাতে থাকে খেলা৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মিলে তৈরি করে ফেলেন মাস্টারপ্ল্যান৷ অসাধারণ স্ট্রোকে রুখে দেন বিজেপি’র বিজয় রথ৷ জয় শ্রী রাম স্লোগান ফিকে করে রাজ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ‘দিদিকে বলো’৷ এর পর একে একে ‘বাংলার গর্ব মমতা’ থেকে ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায়’ একের পর এক চমকে রাজনীতির মোড় বদলে দেন প্রশান্ত কিশোর৷ ২০২১-এ বিশাল ভোটে জিতে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷