মে দিবস

১৮৮৬ সালের ১লা মে প্রায় যে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ জড়ো হয়েছিল আমেরিকার শিকাগো শহরের হেগ মার্কেটে আট ঘন্টার কাজের দাবিতে তাদের কপালে জুটেছিল বুলেট। পুঁজিবাদী শক্তি তাদের সর্বশক্তি দিয়েও সেদিন দাবিয়ে রাখতে পারেনি শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। ১৮৮৯ সালের ১৪ই জুলাই ফ্রান্সে বাস্তিল পতনের শতবার্ষিকী অধিবেশনে প্রস্তাব গৃহীত হয় ১৮৯০ সালের ১লা মে থেকে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী দিবস হিসেবে পালিত হবে।  বছরে এই দিনটি শ্রমজীবী মানুষের জন্য সারা পৃথিবীতে শ্রমিক দিবস পালিত হলেও পৃথিবীজুড়ে পুঁজিবাদের রমরমার আবহে শ্রমজীবী মানুষের সামগ্রিক অবস্থা মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়। এখন অধিকাংশ ব্যক্তি মালিকানাধীন সংস্থা গুলোতে আট ঘন্টা কাজের অধিকারকে ক্রমশ প্রহসনে পরিণত করা হচ্ছে। নিঃশব্দে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে নিপীড়নের সেই কালো দিনগুলো।
দুনিয়াজুড়ে মারণ ভাইরাসের আগ্রাসনে জনজীবন যখন ভীত সন্ত্রস্ত, সাধারণ মানুষের রুজি রোজগার যখন বন্ধ ,শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ, কৃষক, শ্রমিকরাই তখন সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্ত।  দিকে দিকে কর্মহীন হয়ে ফিরে আসছে ঘরে। ফিরে আসতে গিয়ে তারা মারা যাচ্ছে পথেঘাটে। শ্রমের সঠিক মূল্য আজও নির্ধারিত হয় না। দুনিয়াজুড়ে মিলিয়ন,বিলিয়নার,ট্রিলিয়নার,পুঁজিবাদী প্রভুরাই আজ পৃথিবীর ভাগ্যনিয়ন্তা। হয়ত অচিরেই প্রগতিবাদের চাকা উল্টো ঘুরে মানুষ ফিরে যাবে দাসত্বের সেই অন্ধকার যুগে। ইতিমধ্যেই পিঠে আছড়ে পড়তে শুরু করেছে কায়েমি স্বার্থের অদৃশ্য নিপীড়নের চাবুক। শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ একজোট হয়ে রুখে না দাঁড়ালে সমূহ বিপদ অনিবার্য।