সোনালী সঙ্ঘে আজ সভার আয়োজন হয়েছে – ভুতোর জন্য চেয়ার বরাদ্দ হয়েছে – বরাদ্দ হয়েছে ফুলের মালা ।
ভুতো সকলেরই চেনা – পাড়ার পরিচিত মুখ – শুধু এ পাড়াই নয় – আশেপাশের মানুষজনও ভুতোকে ভালোভাবে চেনে জানে – সবকিছুতেই ভুতোর উজ্জ্বল উপস্থিতি – নির্দিষ্ট কোন কাজের সাথে যুক্ত নয় – সকলের আপদে-বিপদে ভুতোর স্মরণ হয় অথবা নিজে থেকেই পৌঁছে যায় সেখানে – ওর নামের সাথে অকম্মার ঢেঁকি-বুরবক-শিব ঠাকুরের ষাড়- অপদার্থ এরকম আরো অনেক অনেক বিশেষণ প্রচলিত আছে পরিচিত মহলে – সহজ সরল বেটে মোটা চেহারার ভুতো এসব নিয়ে কখনোই ভাবে না – প্রতিবাদ করা ওর স্বভাবে নেই – কারো প্রতি রাগ অভিমান ক্ষোভ নেই – সবাইকে ভালোবাসে শ্রদ্ধা করে – সবাই তার আপনজন – এহেন সামাজিক ভুতোকে ইচ্ছে থাকলেও এড়িয়ে যেতে পারে না কেউ – পাড়ার স্কুলে একই ক্লাসে বছরের পর বছর থাকার পর পড়াশোনার মত দুর্বোধ্য কাজ থেকে নিজেকে বিরত করে স্কুলকে বিদায় জানিয়েছে বহুকাল আগেই – নাম সইয়ের জায়গাতেও পৌঁছতে পারেনি – কিন্তু তাতে কি সবার সব হয় না এমনটাই মনে করে ভুতো – যে কাজ কেউ পারে না তাতে ভুতো অনায়াসে লেগে পড়ে ।
সেদিন পাড়ার ক্লাবের পাশের একটা বাড়িতে আগুন লাগে – অন্য সকলের মত পৌঁছে যায় সেখানে – কিন্তু ভেতর থেকে ভেসে আসা আর্তনাদ ভুতোকে স্থির রাখতে পারেনি – দেরি না করে সটান ঢুকে পড়ে বাড়ির ভেতর – আগুনের শিখা তখন বেড়ে চলেছে – সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই ওর – দুজনকে ওখান থেকে বার করে আনে – পাড়ায় ও আজ সকলের কাছেই হিরো – অনেকের উপস্থিতির মধ্যেও কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে সবার – অবজ্ঞার পাত্র ভুতো হাসপাতালের বেডে তিন দিন সত্তর শতাংশ পুড়ে যাওয়া ঝলসানো শরীর নিয়ে যুদ্ধ করে উপহাসের জবাব যে এভাবে দেবে তা নতুন পাড়ার কেউ বুঝে উঠতে পারেনি —- !