একজন চা-ওয়ালার মেয়ে থেকে বায়ুসেনার অফিসার হয়ে ওঠা আঁচল

স্বপ্ন তাদেরই দেখা উচিত, যারা স্বপ্নপূরণের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে পারে। নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও অদম্য ইচ্ছা থাকলে স্বপ্ন একদিন ঠিকই পূরণ হবে। আর সেই আত্মবিশ্বাস ও অদম্য ইচ্ছার কারনেই স্বপ্নপূরণ হলো বছর ২৪ এর আঁচল গাঙ্গোয়ালের। মাত্র ২৪ বছর বয়সেই সমস্ত বাধা পেরিয়ে একজন চাওয়ালার মেয়ে থেকে ভারতীয় বায়ুসেনার ফ্লাইং অফিসার হল আঁচল। তার সফল হওয়ার পথ খুব একটা মসৃণ ছিল না।

লকডাউনের কারনে মেয়ের স্বপ্নপূরণের দিন হাজির থাকতে পারেননি আঁচলের বাবা সুরেশ গাঙ্গোয়াল। কিন্তু দূর থেকেই মেয়েকে আশীর্বাদ করেছেন সুরেশবাবু। মধ্যপ্রদেশের নীমুচ জেলার বাসিন্দা সুরেশ গাঙ্গোয়াল। পেশায় তিনি একজন চা-বিক্রেতা। কিন্তু মেয়ের স্বপ্নপূরণে বরাবরেই পাশে থেকেছেন তিনি। ঘটনাটা ২০১৩ সালের কেদারনাথে ভয়াবহ দুর্যোগের সময়। তখন বায়ুসেনার বীরত্ব টিভিতে দেখেছিলেন আঁচল, ব্যস তারপর থেকেই বায়ুসেনার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জন্মায় আঁচলের মনে।

ছোটোবেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন আঁচল। বাস্কেট বল খেলতে খুব ভালোবাসতেন। কিন্তু কেদারনাথে দুর্যোগের সময় বায়ুসেনার বীরত্বের কাজ দেখে লক্ষ্য স্থির করে নেয় আঁচল। বায়ুসেনায় যোগদান করার জন্য মরিয়া চেষ্টা করেন আঁচল। একবারে নয়, ছয়বারের চেষ্টায় বায়ুসেনায় যোগ দেওয়ার সুযোগ পায় আঁচল। আঁচলের বাবা সুরেশ গাঙ্গোয়াল জানিয়েছেন, ‘টাকার জন্য একদিন আমার পড়াশোনা থেমে যায় দশম শ্রেণিতে। তারপর সেই যে চায়ের কেটলি তুললাম, আজও সেই কাজই করে চলেছি। কিন্তু মেয়ের স্বপ্নপূরণে বাধা হতে দিয়নি টাকাকে। কখনও স্কুল ফি দিতে সমস্যা হয়েছে। তখন ধারদেনা করে মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছি। কিন্তু আমার জন্য মেয়ে হেরে যাক এটা হতে দিইনি।’ একজন চা-ওয়ালার মেয়ে থেকে বায়ুসেনার পাইলট হওয়া আঁচল গর্বিত করেছে গোটা দেশকে। প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলে কিভাবে সমস্ত বাধা পেরিয়ে স্বপ্নপূরধ করতে হয়, তার জ্বলন্ত উদাহরণ বছর ২৪ এর আঁচল।