“আন্তর্জাতিক নারী দিবস” উপলক্ষ্যে ৮ মার্চ “ইণ্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্ৰেস অ্যাসোসিয়েশন” কলকাতা চ্যাপ্টার এবং কল্যাণী মহাবিদ্যালয়, কল্যাণী, নদীয়ার যৌথ উদ্যোগে কল্যাণী মহাবিদ্যালয়ে একদিন ব্যাপী এক মনোজ্ঞ বিজ্ঞান আলোচনাচক্র অনুষ্ঠিত হল। উদ্বোধন সঙ্গীত এবং দীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। স্বাগত ভাষণ দেন কল্যাণী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষা ড. রুণু দাস এবং ইণ্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্ৰেস অ্যাসোসিয়েশন, কলকাতা চ্যাপ্টারের আহ্বায়ক প্রফেসর মনোজ চক্রবর্তী। উদ্বোধনী ভাষণ দেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য এবং জাতীয় বিজ্ঞান কংগ্ৰেসের চিকিৎসা বিজ্ঞান শাখার বর্তমান সভাপতি প্রফেসর গৌতম পাল।
প্রফেসর পাল তাঁর মনোজ্ঞ ভাষণে আমাদের দেশের বিশিষ্ট বিদূষী সমাজ বিজ্ঞানী, বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদদের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি উল্লেখ করেন ১৯৩৯ সালে আমাদের দেশের প্রথম বিদূষী পি.এইচ.ডি. ডিগ্ৰিধারী জীবরসায়ণবিদ ড. কমলা সোহোনীর কথা। উল্লেখ করেন আমাদের দেশের প্রথম ডিএসসি ডিগ্ৰিধারী বিশিষ্ট বৈজ্ঞানিক এবং অধ্যাপিকা ড. অসীমা চট্টোপাধ্যায়ের কথা। বিজ্ঞানে তাঁর অবদান অসীম। তিনি ম্যালেরিয়ার এবং এপিলেপ্সির ওষুধ তৈরি করেছিলেন। উপমহাদেশের ঔষধী গাছগাছড়ার উপর তাঁর যুগান্তকারী কাজ আছে। তিনি ছিলেন ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্ৰেসের ১৯৭৫ সালের সাধারণ সভাপতি।
এছাড়াও প্রফেসর পাল নারীর ক্ষমতায়ণে আমাদের দেশের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা সংগ্ৰামী এবং প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী উত্তরপ্রদেশের শ্রীমতী সুচেতা কৃপালিনী, প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী এবং আমাদের রাজ্যের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। নারী ক্ষমতায়নে এবং শিক্ষার প্রসারে বিংশশতাব্দীর প্রথম দশকে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের এবং হাজী মোহাম্মদ মহাসিনের দিদি মুন্নাজান খানমের কালজয়ী কীর্তি এবং অবদানের কথা তুলে ধরেন।
প্রফেসর পাল তাঁর ভাষণে আরো বলেন যে দেশের উন্নতিতে নারী এবং পুরুষ উভয়ের অবদান জরুরী এবং একে অন্যের পরিপূরক। দেশ এবং সমাজের উন্নতিতে বিশুদ্ধ বিজ্ঞান, ফলিত বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান, সাহিত্য, কলাবিভাগ সবার অবদান জরুরী। এদিন বক্তব্য রাখেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ফারুক আহমেদ। তিনি মায়েদের ভূমিকার কথা গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেন।
আলোচনাসভার দ্বিতীয়ার্ধে বক্তব্য রাখেন ইণ্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্ৰেস অ্যাসোসিয়েশন, কলকাতা চ্যাপ্টারের আহ্বায়ক প্রফেসর মনোজ চক্রবর্তী। প্রফেসর চক্রবর্তী তাঁর মনোজ্ঞ আলোচনায় আমাদের দেশের বিজ্ঞান এব়ং প্রযুক্তির সামগ্ৰিক চিত্র তুলে ধরেন। তিনি আমাদের দেশের বিভিন্ন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী যেমন কলেরা টক্সিন আবিষ্কারক ড. শম্ভুনাথ দে, বিশিষ্ট রসায়নবিদ ড. অসীমা চট্টোপাধ্যায় প্রমুখের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপিকা ড. নীরা সেন সরকার জীব বৈচিত্র নিয়ে মনোগ্ৰাহী বক্তব্য রাখেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির পরিসমাপ্তি ঘটে।