উত্তর পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দাদের আত্মিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে নিরলস পরিশ্রম করে চলেছে ব্যতিক্রম সামাজিক সংস্থা। বন্ধুত্বের সেতু আরও মজবুত করতে তাঁদের হাতিয়ার সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। অতি সম্প্রতি অসমের গর্ব, ভারতরত্ন ড° ভূপেন হাজারিকার জন্মদিবস উপলক্ষে আগরতলায় ‘ভূপেন জয়ন্তী’ পালন করে ব্যতিক্রম। ত্রিপুরা সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় সেই অনুষ্ঠানে সুধাকন্ঠের ভাই সমর হাজারিকার নেতৃত্বে ত্রিপুরা ও অসমের সাংস্কৃতিক দল অংশ নেয়। এবার ত্রিপুরার গর্ব, সুরকার শচীন দেববর্মনকে নিয়ে গুয়াহাটিতে ২৮ অক্টোবর মাছখোয়া স্থিত প্রাগজ্যোতিষ আই টি এ প্রেক্ষাগৃহে বিকেল ৫ টায় অনুষ্ঠিত হবে ‘শচীন জয়ন্তী’। সহযোগিতায় রয়েছে ত্রিপুরা সরকারের তথ্য এবং সাংস্কৃতিক পরিক্রমা বিভাগ, News Bangla 365, নেডফি। এই অনুষ্ঠানে শিল্পী জুবিন গর্গকে সঙ্গীত জীবনে বিশেষ অবদানের জন্য দেওয়া হবে শচীন দেববর্মণের নামাঙ্কিত বিশেষ সম্মাননা “শচীন দেববর্মন ব্যতিক্রম আন্তর্জাতিক পুরষ্কার ২০২৪”। শচীন কর্তার নামাঙ্কিত সম্মানের জন্য তাঁর নাম বিবেচিত হওয়ায় খুসি জুবিন। জুবিন জানান, ড° ভূপেন হাজারিকার মতোই শচীন দেববর্মণও উত্তর পূর্বাঞ্চলের গর্ব। তাঁর নামাঙ্কিত সম্মান লাভ যেকোনও শিল্পীর জন্যই গর্বের।
অনুষ্ঠানে অসমের শিল্প ও সংস্কৃতি জগতের খ্যাতনামাদের পাশাপাশি ত্রিপুরার বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত থাকবেন। প্রধান অতিথি হিসাবে থাকবেন তেলেঙ্গনার রাজ্যপাল তথা ত্রিপুরার প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা। তিনি নিজেও শচীনকর্তার আত্মীয়। জিষ্ণুকর্তা ছাড়াও শচীনকর্তার আরও দুই আত্মীয় ত্রিপুরার ‘মহারাজা’ প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মণ এবং বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী তথা ‘ভূপেন হাজারিকা ব্যতিক্রম আন্তর্জাতিক পুরষ্কার-২০২৪’ প্রাপ্ত তিথি দেববর্মণও উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড° মানিক সাহা, বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল, আগরতলার মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার, ত্রিপুরার তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের প্রধান সচিব প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, বিশিষ্ট গায়িকা মনীষা হাজরিকা, জনপ্রিয় অভিনেত্রী সীমা বিশ্বাস, ত্রিপুরা হেডলাইনের সম্পাদক প্রণব সরকার-সহ অন্যান্যদের। শচীনকর্তাকে নিয়ে একটি বিশেষ সুভিনুর প্রকাশিত হবে। যার সম্পাদনায় আছে লেখক শঙ্খশুভ্র দেববর্মন।
শচীনকর্তাকে স্মরণে রেখে এক বিশেষ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে অংশগ্রহণ করবেন সুবাসনা দত্ত, চিত্রালী গোস্বামী, জয়তি ভট্টাচার্য, প্রণিতা তালুকদার, মনোজ কাশ্যপ, জয় চক্রবর্তী, সার্পজা ধর, প্রিয়াঞ্জলি দাস, চন্দ্রিমা শ্যাম, কুন্ডল রাজ চক্রবর্তী, তনিসা দত্ত, ডালিয়া দত্ত প্রমুখ, সঙ্গে নৃত্যশিল্পী চম্পা চক্রবর্তীর নেতৃত্বে প্রায় ৫০ জন নৃত্যশিল্পী শচীনকর্তার গানে নাচ করবেন। শুভেন্দু ব্যানার্জীর নেতৃত্বে ১১৮ শিল্পী শচীন দেব বর্মনের সংগীতে অনুষ্ঠাটির শুভারম্ভ করবেন। ব্যতিক্রম-এর সভাপতি ড° সৌমেন ভারতীয়া জানান, ত্রিপুরার সঙ্গে অসমের সম্পর্ক বহুদিনের। শচীনকর্তা ও ড° ভূপেন হাজারিকার সুরে দুই রাজ্যের মানুষদের মধ্যে বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় করতেই এই উদ্যোগ হাতে নিয়েছে ব্যতিক্রম। আগামী দিনে অন্যান্য উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যেও এধরনের অনুষ্ঠান করা হবে। অনুষ্ঠানে সবার প্রবেশ অবাধ।